ত্রয়ী: কোচবিহার রাজবাড়িতে কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক মহোৎসব শুরু হল রবিবার। উৎসবের সূচনা করলেন রাজ্যপাল এবং কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রী প্রহ্লাদ সিংহ পটেল। মঞ্চে উপস্থিত সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন।
‘জয় শ্রীরাম’ নয়, ‘জয় শিবচণ্ডী’ ধ্বনি তুললেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় ও কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রী প্রহ্লাদ সিংহ পটেল। এক বার নয়, বেশ কয়েক বার ওই ধ্বনি উঠল। তা নিয়ে রাজনীতি সরগরম কোচবিহারে। বিরোধীদের অভিযোগ, কোচবিহারের মানুষের ভাবাবেগ নিয়ে রাজনীতি করতেই ওই ধ্বনি দেওয়া হয়েছে।
রবিবার, কোচবিহার রাজবাড়িতে কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক মহোৎসব শুরু হল। উৎসবের সূচনা করতে রাজ্যপাল এবং কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রী কোচবিহারে এসেছেন। সেখানে ছিলেন কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকও।
রাজবাড়ি চত্বরে ওই অনুষ্ঠান করা নিয়ে বংশীবদন বর্মণের নেতৃত্বে ‘গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের’ সমর্থকেরা বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, রাজবাড়ির ভিতরে এমন অনুষ্ঠানে তার গরিমা নষ্ট হয়েছে।
এ দিন সরাসরি ওই প্রসঙ্গ না তুললেও বিরোধ নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেন রাজ্যপাল ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাঁদের স্বাগত জানাতে এ দিন অনন্ত রায়ের (মহারাজ) গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ দিন প্রথমে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রী। তিনি ‘জয় শিবচণ্ডী’ ধ্বনি দেন। পরে রাজ্যপাল বক্তব্য দিতে উঠে একই স্লোগান দেন। মন্ত্রী ও সাংসদকেও ডেকে নেন তিনি। তিন জনে একসঙ্গে ওই ধ্বনি দেন।
রাজ্যপাল বলেন, ‘‘এত বড় একটি অনুষ্ঠানে রাজ্যের কোনও প্রতিনিধি নেই। তাঁরা কি আসতে চান না, না অন্য কোনও কারণ রয়েছে।’’ সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এই অনুষ্ঠান কোচবিহারকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরবে।’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘‘এমন একটি অনুষ্ঠানে বিরোধ ঠিক নয়। সবাই মিলে সহমত হওয়া প্রয়োজন।’’
এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি তথা মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ দাবি করেন, ওই অনুষ্ঠানে কোনও জনপ্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘কোচ-,রাজবংশী জনজাতির মানুষের সঙ্গে জয় শিবচণ্ডী ধ্বনি জড়িয়ে আছে। সেই ভাবাবেগ নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা হয়েছে।’’
গ্রেটার নেতা বংশীবদন অবশ্য অভিযোগ করেন, ওই অনুষ্ঠানের পিছনে রাজনীতি আছে। তিনি বলেন, ‘‘শুধু জয় শিবচণ্ডী বললেই ভালবাসা যায় না। এটা ভাবাবেগ নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা। না হলে কোচবিহারের ভারত-ভুক্তি চুক্তি মানত কেন্দ্রীয় সরকার। রাজবাড়ির ঐতিহ্য নষ্ট করত না।’’ এ দিন রাজ্যপাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘সরকারি কর্মীদের রাজনীতি করা ঠিক নয়। এটা অপরাধ। তা বরদাস্ত করা হবে না।’’
ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া শিল্পীদের এক হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন রাজ্যপাল। তিন দিন ধরে ওই অনুষ্ঠানে চলবে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে দোকানিরা তাঁদের সম্ভার নিয়ে হাজির হয়েছেন।