ধর্মতলা চত্বরে বামেদের মিছিল। সোমবার বিশ্বনাথ বণিকের তোলা ছবি।
২ সেপ্টেম্বরের সাধারণ ধর্মঘটে যে সমস্ত সরকারি কর্মচারী অফিসে আসবেন না, তাঁদের বেতন কাটা যাবে বলে সোমবার নির্দেশিকা জারি করল সরকার। গরহাজিরায় ছুটি তো মঞ্জুর হবে না-ই, সার্ভিস ব্রেকও হবে। একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলির ক্ষেত্রেও। তবে এই ধর্মঘট সফল করতে ইতিমধ্যেই উঠেপড়ে লেগেছে বাম-সহ অন্যান্য শ্রমিক সংগঠনগুলি।
জাতীয় শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা বুধবারের সাধারণ ধর্মঘটের বিরোধিতা করবেন বলে আগেই জানিয়েছিলেন আইএনটিটিইউসি নেতৃত্ব। সোমবার ধর্মতলা এলাকায় আইএনটিটিইউসি-র এক পথসভাতে সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি এবং রাজ্য বিধানসভার সরকারি দলের মুখ্য সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দেন, ধর্মঘটের দিন সরকারি-বেসরকারি সমস্ত দফতর, কলকারাখানা চালু রাখতে হবে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলায় উন্নয়নযজ্ঞ চলছে। সেই উন্নয়নের কাজ যাতে ব্যাহত হয়, সে জন্য সিপিএম এবং তাদের সহযোগী দলগুলি ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। তারা শান্ত বাংলাকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে।’’ বুধবার সমস্ত দফতর সচল রাখাই তাঁদের কাজ জানিয়ে শোভনদেববাবু ধর্মঘটের-সমর্থকদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘যিনি কাজে যেতে ইচ্ছুক তাঁকে কেউ বাধা দিলে, পুলিশ গিয়ে গেট খালি করে দেবে।’’
ওই সভায় তৃণমূল বিধায়ক তমোনাশ ঘোষ, আইএনটিটিইউসির দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি সন্তোষ মজুমদারও শোভনদেববাবুর মতোই অভিযোগ করেন, সিপিএম এবং ধমর্ঘটকারী সংগঠনগুলি রাজ্যে হিংসা ও অশান্তির ফাঁদ পেতেছে। ধর্মঘটকে সামনে রেখে তারা অশান্তি সৃষ্টির চক্রান্ত করছে। এই চক্রান্ত ব্যর্থ করার আবেদন জানান তিনি। ওই পথসভার আগে শোভনদেববাবুর নেতৃত্বে ধর্মতলা এলাকায় একটি বিশাল মিছিল বেরোয়। মিছিলটি কলকাতা পুরসভার সামনে থেকে শুরু হয়। লেনিন সরণি, রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যার হয়ে ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে মিছিল শেষ হয়।
এ দিন বিকেলে ধর্মঘট নিয়ে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর কাছে স্মারকলিপি দেন বাম শ্রমিক-নেতারা। তার পরে ধর্মঘটের সমর্থনে ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেল থেকে মিছিল বার হয়। সিটু নেতা শ্যামল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যে সব দাবি নিয়ে আমরা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি, তা যুক্তিযুক্ত। আমাদের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্যই রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।’’ তৃণমূল-বিজেপি একজোট হয়ে এই ধর্মঘট ভাঙতে চাইছে— এই অভিযোগ তুলে শ্যামলবাবু বলেন, ‘‘জোর করে ধর্মঘট ভাঙতে গেলে প্রতিরোধ হবে। কারণ, শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থরক্ষায় এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।’’