গৌতম দেব। —ফাইল চিত্র।
এক সময় তাঁর নজর দিয়েই দার্জিলিং জেলার রাজনীতিকে দেখতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গের সেই নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী গৌতম দেবকে জেলা সংগঠনের স্থায়ী আমন্ত্রিত সদস্য করলেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব।
শনিবার সন্ধ্যায় দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও রাজ্য তফসিলি জনজাতি সংগঠন (এসটি সেল)-এর তালিকা প্রকাশ করা হয়। তালিকা প্রকাশের পর দেখা যায় উত্তরবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে করা হয়েছে সংগঠনের স্থায়ী সদস্য। তৃণমূলের একাংশের ব্যাখ্যা, আর কয়েক মাসের মধ্যেই ভোট। ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি বিধানসভা থেকে ফের প্রার্থী হবেন গৌতম। তাই সেখানেই মনোনিবেশ করতে বলা হয়েছে তাঁকে। যে কারণে জেলা সংগঠনের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়নি পর্যটনমন্ত্রীকে।
আবার গৌতম ঘনিষ্ঠরা জানাচ্ছেন, বছর দেড়েক আগেই সভাপতি পদে রঞ্জন সরকারকে বসিয়েছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তাই জেলা সংগঠনে গৌতমকে ‘ঠুঁটো জগন্নাথ’ করে দেওয়ার যে কথা বিরোধী শিবির থেকে বলা হচ্ছে তা অমূলক। কারণ এখনও গৌতমই উত্তরবঙ্গ তৃণমূলের কোর কমিটির চেয়ারম্যান। তাই দলে যথেষ্টই গুরুত্ব রয়েছে তাঁর। দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের একাংশের অবশ্য ব্যাখ্যা, দেড় বছর আগে জেলা সংগঠন থেকে তাঁকে সরিয়ে দিলেও, কমিটিতে তাঁর অনুগামীরা এখনও সক্রিয়। তাই সংগঠনে ভারসাম্য রক্ষা করতেই রাজ্য নেতৃত্ব গৌতমকে একটি আলঙ্কারিক পদ দিয়েছেন। কারণ, জেলা সংগঠনে গৌতমকে একেবারে ব্রাত্য করে দিলে তাঁর অনুগামীদের বিমুখ হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। তাই নতুন পদ তৈরি করে গৌতমকে বসিয়ে ভোটের আগে যাবতীয় বিতর্ক থেকে বিরত থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ জানুয়ারি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম। ১০০টি চিঠি দেওয়ার পরেও তাঁর বিধানসভা এলাকায় রাস্তা মেরামতের কাজ না হওয়াতেই ওই ক্ষোভের বিস্ফোরণ হয়েছিল বলেই অভিযোগ করেছিলেন ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিধায়ক। তাঁর ক্ষোভ প্রশমনে উদ্যোগী হয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। ফোন করে তাঁর ক্ষোভের কারণ জানতে চেয়েছিলেন। দলনেত্রীকে ক্ষোভের কথা জানানোর পাশাপাশি দার্জিলিং তথা উত্তরবঙ্গের রাজনীতি নিয়েও গৌতমের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ আলোচনা হয়েছিল মমতার। তার ঠিক এক সপ্তাহ পরেই এই সাংগঠনিক রদবদল হল দার্জিলিং জেলা তৃণমূলে।
এ দিন তৃণমূলের তফসিলি জনজাতি সংগঠনের (এসটি সেল) নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটির সভাপতি হয়েছেন দেবু টুডু। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে পরাজয়ের পর ঝাড়গ্রামের তৃণমূল প্রার্থী বীরবাহা সোরেনকে তৃণমূল এসটি সেলের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ দিন তাঁকে সরিয়ে বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবুকে ফের এই দায়িত্ব দেওয়া হল।