বাংলার স্বার্থ দেখেনি দল, তোপেই জবাব

সিপিএম সূত্রের খবর, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জবাব দিতে গিয়ে বাংলার নবজাগরণের কথা থেকে শুরু করেছেন গৌতমবাবু। একাধিক বার টেনে এনেছেন প্রয়াত জ্যোতি বসুর প্রসঙ্গ।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:১৭
Share:

গৌতম দেব।

সুর নরম বা পিছু হঠার প্রশ্ন নেই। পলিটব্যুরোর তলবি চিঠির জবাবে বরং আরও আক্রমণে চলে গেলেন গৌতম দেব!

Advertisement

দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রকাশ্যে প্রশ্ন তোলায় গৌতমবাবুর ব্যাখ্যা চেয়েছিল সিপিএমের পলিটব্যুরো। তার জবাব দিতে গিয়ে গৌতমবাবু আবার নাম না করে প্রকাশ কারাটদের বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের হাতে পড়ে বাংলার স্বার্থ বারবার উপেক্ষিত হয়েছে। যত দিন বাংলা ভোটে জিতিয়ে বেশি বেশি সাংসদ দিয়েছে, দিল্লিতে সিপিএমের দাপটও তত থেকেছে। বাংলার স্বার্থ একটা দল দেখবে না, আবার বাংলার মানুষের কাছে ভোটও চাওয়া হবে— এই দুই দিক একসঙ্গে রাখা যায় না বলে সওয়াল করেছেন কেন্দ্রীয় কমিটির এই সদস্য। প্রথমে তাঁর মন্তব্য, পলিটব্যুরোর ব্যাখ্যা তলব এবং আবার গৌতমবাবুর জবাব, সব মিলে বিতর্ক বেশ ঘনীভূত। দিল্লিতে আজ, বুধবার থেকে দু’দিনের পলিটব্যুরো বৈঠকে বিষয়টি আলোচনায় আসতে পারে।

সিপিএম সূত্রের খবর, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জবাব দিতে গিয়ে বাংলার নবজাগরণের কথা থেকে শুরু করেছেন গৌতমবাবু। একাধিক বার টেনে এনেছেন প্রয়াত জ্যোতি বসুর প্রসঙ্গ। মনে করিয়ে দিয়েছেন, হাতে সাংসদ থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় কমিটির আপত্তিতে জ্যোতিবাবুকে প্রধানমন্ত্রী হতে দেওয়া হয়নি। তার পরে ২০০৪ সালে বাংলার মানুষ ঢেলে সিপিএমকে ভোট দেওয়ার পরেও দল কেন্দ্রে সরকারে যোগ দেয়নি। উল্টে পরমাণু চুক্তিকে ঘিরে সরকারের থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে রাজ্যে কংগ্রেস-তৃণমূলের জোটের রাস্তা খুলে দেওয়া হয়েছে! গৌতমবাবুর যুক্তি, বাংলার কর্মী-সমর্থকদের যে আবেগ, রাজ্যসভায় সীতারাম ইয়েচুরিকে প্রার্থী না করার সিদ্ধান্তকে ঘিরে সেই মনোভাবই তিনি তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন।

Advertisement

চিঠি চালাচালির বিষয়ে গৌতমবাবু বা দলের সাধারণ সম্পাদক ইয়েচুরি, কেউই প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি। তবে পলিটব্যুরোর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘চিঠির জবাব বিবেচনা করে দল উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেবে। এর সঙ্গে দলীয় শৃঙ্খলার প্রশ্ন জড়িত।’’ আবার বঙ্গ ব্রিগে়ডের একাংশের পাল্টা সওয়াল, শৃঙ্খলার কথা বলে দিনের পর দিন হকের কথা ঠেকিয়ে রাখা যাবে না!

কারাটদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করায় বাংলায় দলের মধ্যে চর্চাও বাড়ছে গৌতমবাবুকে নিয়ে। রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবারই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রয়াত সুভাষ চক্রবর্তী ও গৌতমবাবুর ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘কোটার নয়, জনতার নেতা। শিক্ষক দিবসে শ্রদ্ধা’। সিপিএমের একাংশের বক্তব্য, সংখ্যালঘু, মহিলা বা দলিত ‘কোটা’ দেখে কমিউনিস্ট পার্টিতে কেন কমিটিতে লোকজনকে রাখা হবে, সেই প্রশ্নই ফের উস্কে দিতে চেয়েছেন সাংসদ। আবার সাসপেনশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে ঋতব্রতকে এ দিন ভেবিয়ায় দলের কর্মসূচিতে পাঠিয়েছিলেন গৌতমবাবুরাই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement