গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মালগাড়ির চালকের কাছেও ছিল কাগুজে অনুমতি। রেলের পরিভাষায় যাকে বলে ‘পেপার লাইন ক্লিয়ার টিকিট’ (পিএলসিটি)! রেল সূত্রে খবর, সোমবার ভোর থেকেই রাঙাপানি এবং চটের হাট অংশে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা বিকল। ওই অংশে তাই ট্রেন চলাচল হচ্ছিল কাগুজে সিগন্যালে। রেলকর্মীদের একাংশের মতে, দুর্ঘটনার কবলে পড়া মালগাড়ির চালক সিগন্যাল মানেননি! প্রশ্ন উঠছে, সত্যিই কি দোষ ছিল তাঁর? যদি মালগাড়ির চালকের কাছে কাগুজে অনুমতি থাকে তবে গলদ কোথায় ছিল?
রেলের একটি সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল অকেজো হওয়ায় কাঞ্চনজঙ্ঘা এবং মালগাড়ি, দুই ট্রেনের চালক এবং গার্ডকেই কাগুজে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল। রাঙাপানি স্টেশনের স্টেশন মাস্টারই ওই কাগুজে অনুমতি দিয়েছিলেন। রেল সূত্রে খবর, কাঞ্চনজঙ্ঘার পাশাপাশি মালগাড়ির চালককেও ‘টিএ ৯১২’ ফর্ম দেওয়া হয়েছিল। সেই ফর্মে উল্লেখ ছিল কোন কোন সিগন্যাল ‘ভাঙতে’ পারবেন চালক। এমনকি, কোথা থেকে কোন অবধি এই ‘অনুমতি’ বহাল থাকবে, তারও উল্লেখ ছিল। মালগাড়ির চালক ও গার্ডের কাছেও ছিল সেই ছাড়পত্র। সাধারণত, স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা খারাপ হয়ে গেলে ওই নির্দেশের ভিত্তিতেই ট্রেন চালিয়ে থাকেন চালক।
রেলের ওই সূত্রে আরও দাবি করেছে, রাঙাপানি থেকে চটের হাট পর্যন্ত মোট ৯টি লাল সিগন্যাল ‘ভাঙা’র অনুমতি ছিল মালগাড়ির চালকের কাছে। মালগাড়ির চালক ও গার্ডকে স্টেশন মাস্টার অনুমতি দিয়েছিলেন, এ৫-৬৫৪, এ৫-৬৫২, এ৫-৬৫০, এ৫-৬৪৮, এ৫-৬৪৬, এ৫-৬৪৪, এ৫-৬৪২, এ৫-৬৪০ এবং এ৫-৬৩৮ সিগন্যাল ‘ভাঙা’ যাবে। অনুমতিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছিল, চালককে অবশ্যই নজর রাখতে হবে যাত্রাপথের লেভেলক্রসিং গেটের উপর। যদি গেট বন্ধ থাকে তবেই ট্রেন চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন চালক। গেট খোলা থাকলে তার আগেই ট্রেনকে থামিয়ে দিতে হবে তাঁকে। কিন্তু তার পরও কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল? রেলের তরফে এখনও এ নিয়ে সরকারি ভাবে রেলের তরফে কিছু জানানো হয়নি। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজ এবং রেল পরিষেবা স্বাভাবিক করাই এই মুহূর্তে প্রাথমিক লক্ষ্য। বাকিটা তদন্তসাপেক্ষ।