পাহাড়ে শান্তি এবং স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরাতে গেলে মোর্চাকে সদিচ্ছা দেখাতে হবে, মনে করছে জিএনএলএফ, গোর্খা লিগ-সহ একাধিক দল। তাদের বক্তব্য, দর কষাষকির রাজনীতি করতে গেলে শান্তি ফেরানোর প্রক্রিয়া দীর্ঘতর হবে। এবং এর মধ্যে আরও হিংসা, বিস্ফোরণের মতো ঘটনা ঘটলে পাহাড়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী বাড়তে পারে। আবার নামানো হতে পারে সেনাও।
যদিও কবে আলোচনায় বসবে মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটি, তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এই মুহূর্তে বিমল গুরুঙ্গেরও দেখা নেই। এই পরিস্থিতিতে মোর্চার একটি অংশ চাইছে কেন্দ্রীয় কমিটি যদি না-ও পারে, অন্তত গোর্খাল্যান্ড সমন্বয় সমিতি বা জিএমসিসি আলোচনায় বসুক। যদিও সে বিষয়েও এখনও কেউ কিছু বলতে পারছে না। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি এখন দিল্লিতে। তিনি বলেন, ‘‘এখনও অবধি আমাদের দল কিংবা জিএমসিসি-র বৈঠকের দিনক্ষণ ঠিক হয়নি।’’ রাজ্যের কাছ থেকেও তাঁরা যে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাননি, তা-ও জানিয়েছেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, সরকার ডাকলেই বন্ধ তোলার ঘোষণা করে তাঁরা বৈঠকে যোগ দিতে যাবেন, রাজ্য এখন সেই নিশ্চয়তা চাইছে। যা নিয়ে রোশনের বক্তব্য, ‘‘আলোচনায় ডাকা হোক। তার পরে এ সব নিয়ে বলা ঠিক হবে।’’
তবে পাহাড়ে আলোচনার চাপ বাড়ছে। জিএনএলএফের মতো দলগুলি বোঝাচ্ছে, নিঃশর্ত আলোচনাতেও তারা আগ্রহী। জন আন্দোলন পার্টিও একই কথা বোঝাতে দিল্লি যেতে চাইছে। তাদের বক্তব্য, বিস্ফোরণ হওয়ার পরে বিভিন্ন দিক থেকে চাপ আরও বাড়ছে। এমনিতেই গুরুঙ্গ-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে ইউএপিএ-তে মামলা হয়েছে। পাহাড়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের জঙ্গি গোষ্ঠী বা নেপালের মাওবাদীরা সক্রিয় কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও বিনয় তামাঙ্গ এ দিন বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘‘মোর্চার সঙ্গে উত্তর পূর্ব ভারত, নেপাল অথবা বিশ্বের কোনও জঙ্গি সংগঠনের যোগ নেই। এটা আরও একবার পরিষ্কার করে দিতে চাই। পাহাড়ে যে বিস্ফোরণ হচ্ছে, তার তদন্ত হোক। ’’
সোমবার অবশ্য মোর্চার মিছিলে ফের ভিড় দেখা গিয়েছে দার্জিলিঙের রাস্তায়। পুলিশের টহলদারিও চলেছে। কালিম্পঙে থানার সামনে বিস্ফোরণে মৃত সিভিক পুলিশের স্মরণে সভা করেছে মোর্চা এবং সিপিআরএম নেতৃত্ব। পাহাড়ের অন্য রাজনৈতিক দলগুলির দাবি, বিস্ফোরণের সঙ্গে নিজেরা যুক্ত নয় এটা প্রমাণ করার তাগিদেই মোর্চা স্মরণ সভা করছে।