প্রতীকী ছবি।
অঙ্ক বুঝতে পারেনি অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীটি। হস্টেলে পড়ানোর সময় বার বার নিয়ম জানতে চাইছিল সে। সেই ‘অপরাধে’ ওই ছাত্রীকে মেরে ডান হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠল দুই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে।
হলদিয়ার সুতাহাটা ব্লকের বিজয়রামপুর মসনদ-ই-আলা গার্লস মাদ্রাসার হস্টেলে গত ২১ জুন ওই ঘটনা ঘটে। সুতাহাটার আমলাট ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে রুপসানা খাতুন নামে জখম ওই ছাত্রীর প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। পরে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে তার ডান হাতের এক্স-রে করলে দেখা যায়, কব্জি ভেঙে গিয়েছে। ওই ছাত্রীর মা ২৬ জুন সুতাহাটা থানায় ওই দুই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।
রুপসানার মা হলদিয়া পুরসভার ঠিকাকর্মী। বাবা বেকার। দরিদ্র পরিবার। মানসুরা বিবি জানান, মেয়ে হস্টেলে থেকে পড়ে। গত ২১ জুন রাতে হস্টেলে টিউশনের সময় রুপসানা পারভিন ও সুরাইয়া খাতুন নামে দুই শিক্ষিকা তাঁর মেয়েকে মারধর করেন। মারের চোটে মেয়ের ডান হাত ভেঙে যায়। পরদিন মেয়ের সহপাঠীদের কাছে খবর পেয়ে তাঁরা হস্টেলে যান। সেখান থেকে মেয়েকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন। দিন কয়েক পরে তাঁরা স্কুল-কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে তারা দুর্ব্যবহার করে তাড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ। এরপরই পুলিশের দ্বারস্থ হন মানসুরা।
ওই ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, পুলিশে জানানোর পরেও কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় তাঁরা ফের ৩ জুলাই থানায় যান। তখন তাঁদের বলা হয়, ওই দুই শিক্ষিকার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা হচ্ছে। তারপরেও তদন্ত না এগনোয় মানসুরারা ফের ৭ জুলাই সকালে থানায় যান। এরপর নড়েচড়ে বসে পুলিশ। অভিযুক্ত দুই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়। কেন আগে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? পুলিশের দাবি, ঘটনার তদন্ত চলছে। এখনই কিছু বলা যাবে না। অভিযুক্ত দুই শিক্ষিকার পাশে দাঁড়িয়েছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মনীষা দাস। তাঁর দাবি, ‘‘ছাত্রীটির পরিবারের লোক মিথ্যা বলছেন।’’ যদিও হস্টেলে ছাত্রীর হাত ভাঙল কী করে, তার সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি। স্কুলের পরিচালন কমিটির সম্পাদক শ্রীবাস মাইতি বলেন, ‘‘এক ছাত্রীকে মারধর করার জন্য থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে বলে খবর পেয়েছি।’’