‘আমি নির্দোষ, তোমরা ভেঙে পোড়ো না মা’

বোলপুরের খোসকদমপুর যেমন বিশ্বাস করে না, পাড়ার ছেলে এমন কাজ করতে পারে। শনিবার রাতে সেই ছেলেরই ফোন এল মায়ের কাছে গ্রামের বাড়িতে। জি ডি বিড়লা স্কুলে শিশু নিগ্রহে অভিযুক্ত শিক্ষক অভিষেক রায় ফোনে বলেন, ‘‘মা তোমরা ভেঙে পোড়ো না। সঠিক তদন্ত হলে দেখবে আমি নির্দোষ।’’

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:২৪
Share:

উদ্বেগ: টালিগঞ্জের বিক্ষোভে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

শহর কলকাতা উত্তাল তাঁদের দু’জনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে ঘিরে। কিন্তু, তাঁরা অপরাধ করেছেন, মানতেই নারাজ তাঁদের পরিজন ও পরিচিতেরা।

Advertisement

বোলপুরের খোসকদমপুর যেমন বিশ্বাস করে না, পাড়ার ছেলে এমন কাজ করতে পারে। শনিবার রাতে সেই ছেলেরই ফোন এল মায়ের কাছে গ্রামের বাড়িতে। জি ডি বিড়লা স্কুলে শিশু নিগ্রহে অভিযুক্ত শিক্ষক অভিষেক রায় ফোনে বলেন, ‘‘মা তোমরা ভেঙে পোড়ো না। সঠিক তদন্ত হলে দেখবে আমি নির্দোষ।’’

রবিবার অভিষেকের মা কবিতা রায় দাবি করেন, ‘‘আমার ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছে। সে এই কাজ করতে পারে, আমি বিশ্বাস করি না। কোথাও একটা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমরা সঠিক বিচার চাই।’’ খোসকদমপুর গ্রামের মানুষজনও জানান, অভিষেককে ফাঁসানো হয়েছে। এলাকায় তিনি বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজে সব সময় যুক্ত। তাঁর পরিবারের আক্ষেপ, ঘটনার বিচারের আগেই সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে সমাজ—অভিষেককে দোষী সাব্যস্ত করে দিচ্ছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্তে অনড় জিডি বিড়লা কর্তৃপক্ষ

আরও পড়ুন: ত্রিপাক্ষিক নিয়ে রফাসূত্রের খোঁজ

অভিষেকের বাবা, বিশ্বভারতীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মী তপন রায় বলেন, “বিচার হওয়ার আগেই সবাই আমার ছেলেকে দোষী ঠাওরাচ্ছে। আমার ছেলে ওই কাজ করতে পারে না। সাত বছর ওই স্কুলে চাকরি করছে। কোনও খারাপ রিপোর্ট নেই ওর নামে। একটা বাচ্চা মেয়ে ছবি দেখে বলল, আর আমার ছেলেকে দোষী বানিয়ে দেওয়া হল! আগে সঠিক তদন্ত হওয়া দরকার।” গ্রামবাসী বগলা রায়, শ্রীমন্ত খাঁ, অনিমা রায়দের বক্তব্য, “অভিষেককে ফাঁসানো হচ্ছে। গ্রামে ওর মতো ভাল ছেলে হয় না। এলাকার মানুষের উপকার করে অভিষেক। ও দোষী হলে শাস্তি হোক। কিন্তু, আগে ঠিক তদন্ত হোক।”

অভিষেকের পরিবারের সঙ্গে তা-ও কথা বলা গিয়েছে। কিন্তু, আসানসোল শহরের আপার চেলিডাঙায় আর এক অভিযুক্ত শিক্ষক মহম্মদ মফিজউদ্দিনের পরিবার নিজেদের ফ্ল্যাটে তালা লাগিয়ে নিরুদ্দেশ হয়েছে শুক্রবার বিকেলে থেকেই। সে দিনই শিশু নিগ্রহের কথা প্রকাশ্যে আসে। বড় মসজিদ ও মাজাহারের ঠিক সামনের বহুতল আবাসনে বৃদ্ধা মা, ভাই ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন মফিজউদ্দিন। পড়াশোনার জন্য অবশ্য ওই যুবক পার্ক সার্কাসে থাকেন বেশ কয়েক বছর ধরে।

১৯৯৫ নাগাদ মালদহ থেকে সপরিবারে কর্মসূত্রে আসানসোলে আসেন মফিজউদ্দিনের বাবা। পাড়ার লোকজন জানান, বিশেষ মেলামেশা করতেন না মফিজউদ্দিনের পরিবারের কেউ। মাস দুই আগে পুরুলিয়ায় তাঁর বিয়ে হয়। সেই অনুষ্ঠানে প্রতিবেশীরা প্রায় কেউই নিমন্ত্রিত ছিলেন না। পার্ক সার্কাসের গোরাচাঁদ লেনে এক বহুতলের চার তলায় ভাড়ার ফ্ল্যাটে আরও তিন জনের সঙ্গে থাকেন মফিজউদ্দিন। ওই বহুতলেরই তিন তলায় থাকেন ফ্ল্যাটটির মালিক মহম্মদ সিরাজ। তাঁর কথায়, ‘‘ও তো খুবই ধর্মভীরু। আমার মনে হয় ফাঁসানো হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement