অমিত শাহের তৈরি করা কমিটিতে ছিলেন বলে দাবি চন্দ্রচূড় গোস্বামীর। — ফাইল চিত্র।
২০২১-এর ভোটে বাংলা জয় করতে বিদ্বজ্জনেদের নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করে দিয়েছিলেন অমিত শাহ। সেই বিশেষ কমিটিতে তিনিও ছিলেন, দাবি অসুর-মূর্তি বিতর্কে জড়িয়ে পড়া হিন্দু মহাসভার নেতা চন্দ্রচূড় গোস্বামীর। তাঁর আরও দাবি, ভোটের আগে বিজেপির হয়ে তিনি প্রচারও করেছেন বিভিন্ন এলাকায়। যদিও গান্ধীজির মতো দেখতে মহিষাসুর বানিয়ে বিতর্কে জড়ানো চন্দ্রচূড়ের সঙ্গে কোনও ধরনের নৈকট্য মানতে নারাজ রাজ্য বিজেপির নেতারা।
রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ‘লক্ষ্য সোনার বাংলা’ নামে কর্মসূচি নেয় বিজেপি। অমিত শাহের পরিকল্পনা মতো এর জন্য বাংলার বিদ্বজ্জনদের নিয়ে একটি ‘এলিট কমিটি’ গড়া হয়। চন্দ্রচূড়ের দাবি, শাহি-পছন্দের সেই বক্তাদের তালিকায় ছিলেন তিনিও। নানা বিষয়কে সামনে রেখে বিজেপির হয়ে প্রচারের জন্য নেমেছিলেন ময়দানে। রাজ্য বিজেপির বিদ্বজ্জন কমিটির তিনি সহ-আহ্বায়ক ছিলেন বলেও দাবি চন্দ্রচূড়ের।
পরবর্তী কালে বিজেপির থেকে তিনি দূরে সরে গিয়েছেন বলেও জানালেন চন্দ্রচূড়। তাঁর দাবি, ‘‘আমি বুঝেছি, বিজেপি কোনও ভাবেই হিন্দুত্ববাদী বা জাতীয়তাবাদী দল নয়। এই নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলটি নিজেদের প্রচারের আলোয় আনার জন্য, রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য এই দাবি করে। এরা আদানি, অম্বানীদের মতো ধনকুবেরদের দ্বারা পরিচালিত একটি দল।’’ বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়ার আরও কারণ জানিয়েছেন নিজেকে হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি বলে দাবি করা চন্দ্রচূড়। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে অনেকে বিজেপির হয়ে কাজ করেছেন। অথচ দেখলাম, ভোট পরবর্তী হিংসার সময় তাঁরা যখন আক্রান্ত হলেন তখন বিজেপি নেতারা ফোন সুইচড অফ করে দিয়েছিলেন। এই দলটি হিন্দু বাঙালির ভাবাবেগকে আঘাত করেছে। কোথাও বোধ হয় এদের বাঙালিদের প্রতি ঘৃণাবোধও কাজ করে। আমি সেটা অনুভব করেছি।’’ যদিও সেই চন্দ্রচূড়ের বিরুদ্ধেই এ বার ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগ উঠেছে। রুবি পার্কে তিনি যে পুজোর মূল উদ্যোক্তা, সেখানে দুর্গাপুজোর অসুর মূর্তি মহাত্মা গান্ধীর অনুকরণে তৈরি বলে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তার জেরে বদলেও দেওয়া হয়েছে অসুর-মূর্তি।
চন্দ্রচূড়ের বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যকে। তাঁর উত্তর, ‘‘বিজেপি একটি চলমান দল। সংগঠনে অনেকেই আসেন আবার চলে যান। বিধানসভা ভোটের আগে সেটা বেড়েছিল। উনি হয়তো ছিলেন। কিন্তু ভবানীপুর উপনির্বাচনে তিনিই তো আবার হিন্দু মহাসভার প্রার্থী হয়েছেন শুনেছি। তা হলে তিনি বিজেপি হলেন কী করে?’’ একইসঙ্গে শমীক বলেন, ‘‘গান্ধীজির মতাদর্শের সঙ্গে কারও দ্বিমত থাকতেই পারে। গণতন্ত্রে এতে কোনও অন্যায় নেই। কিন্তু যে ভাবে গান্ধীজিকে দেখানো হয়েছে তা নিন্দনীয় এবং নিম্নরুচির পরিচয়।’’
ভবানীপুরে উপনির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী হয়েছিলেন চন্দ্রচূড়। পেয়েছিলেন মাত্র ৮১টি ভোট।