নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মদিনকে সামনে রেখে আলাদা কমিটি গড়ে অ-বিজেপি ঐক্যের ছবি দেখানোর চেষ্টা শুরু হল বাম শিবিরে। এমন প্রয়াসের উদ্যোক্তা বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক। যে কমিটির তত্ত্বাবধানে বছরভর নানা কর্মসূচির মাধ্যমে নেতাজির জন্মের ১২৫ বছর পালনের ব্যবস্থা হচ্ছে, তাতে বিজেপি বাদে সব দলের প্রতিনিধিকেই আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন ফ ব নেতৃত্ব। তৃণমূলের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ঠিক হয়েছে, শাসক দলের মহাসচিব ও রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ওই কমিটির অন্যতম ‘পেট্রন’ হিসেবে থাকবেন। কমিটিতে থাকবেন বিদ্বজ্জন ও নেতাজি অনুরাগীরাও। একটি নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানকে ঘিরে হলেও রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আগে এমম উদ্যোগ যথেষ্ট অর্থবহ বলেই রাজনৈতিক শিবিরের অনেকের মত।
ফ ব-র রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘নেতাজি সাম্প্রদায়িক সংহতির অনন্য নজির রেখে আজাদ হিন্দ ফৌজ গড়েছিলেন। বিজেপির কোনও অধিকারই নেই নেতাজিকে নিয়ে কথা বলার!’’ পার্থবাবু অবশ্য এখনও প্রকাশ্যে মন্তব্য করেননি। তবে তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, এমন উদ্যোগে তাদের আপত্তির কিছু নেই। কমিটির প্রথম বৈঠক ডাকা হয়েছে ২৯ ডিসেম্বর। পাশাপাশিই ঠিক হয়েছে, এ বার রেড রোডে নেতাজি মূর্তিতে চিরাচরিত মালা দেওয়ার কর্মসূচির বদলে নেতাজি জয়ন্তী কমিটির উদ্যোগে উত্তরে মহাজাতি সদন ও দক্ষিণে হাজরা মোড় থেকে দু’টি মিছিল আসবে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে। সেখানেই ২৩ জানুয়ারির অনুষ্ঠানে থাকবেন বাম নেতৃত্ব।
অন্য দিকে, আসন ভাগের আলোচনা শুরু হওয়ার আগে যৌথ আন্দোলনকে আরও জোরালো করার লক্ষ্যে এ বার কৃষক ধর্নায় কংগ্রেসকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে বামেরা। কেন্দ্রের তিনটি কৃষি আইন এবং বিদ্যুৎ (সংশোধনী) বিল প্রত্যাহারের দাবিতে যে কৃষক আন্দোলন চলছে, তার প্রতি সংহতি জানিয়ে বামেরা আগামী ২৯ তারিখ কলকাতায় কেন্দ্রীয় অবস্থানের কর্মসূচি নিয়েছে। সেখানেই কংগ্রেস নেতৃত্বকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে দেশ জুড়ে ধর্মঘটে বাম দলগুলির সঙ্গেই ছিল কংগ্রেস। তবে আলিমুদ্দিনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বামফ্রন্টের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে, রাজ্য স্তরে দু’পক্ষের যৌথ কর্মসূচি এখনও দানা বাঁধছে না। বিজেপি হইহই করে ময়দানে নেমে পড়েছে, তাদের কেন্দ্রীয় নেতারা আসছেন। বাম ও কংগ্রেস জোটের কর্মসূচি বাড়াতে না পারলে বিজেপিরই সুবিধা হবে। তখন ঠিক হয়, ২৯ তারিখ রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে কৃষক অবস্থানে কংগ্রেসকে ডাকা হবে। বাম নেতৃত্বের অনেকেই উষ্মা প্রকাশ করেছেন, নীতিগত ভাবে সব ঠিক হয়ে গেলেও কংগ্রেসের দিক থেকে আসন সংক্রান্ত আলোচনা শুরু বা যৌথ কর্মসূচি নিতে এত দেরি হচ্ছে কেন? বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু অবশ্য বৈঠকে জানিয়েছেন, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ও সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। তাঁরা বলেছেন, শীঘ্রই আসন-রফার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে।