ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটের ভরাডুবি থেকে শিক্ষা নিয়ে কংগ্রেস সম্পর্কে রাজনৈতিক অবস্থান শেষ পর্যন্ত বদলে ফেলল ফরওয়ার্ড ব্লক। কংগ্রেস-সহ গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে যৌথ মঞ্চ গড়ে তোলার প্রস্তাব গৃহীত হল দলের রাজ্য কাউন্সিলের অধিবেশনে। গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ অন্যান্য দলের সঙ্গে সমন্বয়ের কাজ কখন কী ভাবে করতে হবে, সেই দায়িত্ব দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর হাতেই ছেড়ে দিয়েছে ফ ব-র রাজ্য কাউন্সিল।
অধিবেশনের শুরুতে খসড়া প্রতিবেদনেই বলা হয়েছিল, পুরুলিয়ায় দলের গত রাজ্য সম্মেলনে কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও রকম সমঝোতায় না যাওয়ার যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে তা ‘বাস্তবসম্মত’ ছিল না। তিন দিনের অধিবেশন শেষে বুধবার জবাবি ভাষণে ফ ব-র রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, একের পর এর প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়ছে। সংবিধান এবং ধর্মনিরপেক্ষতার কাঠামো বিপন্ন। এই পরিস্থিতির মোকাবিলা কারও একার পক্ষে করা সম্ভব নয়। এ রাজ্যে তৃণমূলের মতো অগণতান্ত্রিক এবং বিজেপির মতো স্বৈরাচারী ও সাম্প্রদায়িক শক্তির বিপরীতে কংগ্রেস-সহ গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিকে নিয়ে মঞ্চ গড়ে আন্দোলনের কর্মসূচি নেওয়া উচিত। তবে কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা ও সিদ্ধান্তের ভার শুধু সিপিএমের উপরে রাখলে চলবে না। এগোতে হবে বামফ্রন্টের তরফে। ফ ব-র এই পরিবর্তিত মনোভাবকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বও।
বাম জমানায় নন্দীগ্রামের ঘটনার পরে পঞ্চায়েত ভোটে একা লড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল ফ ব-র রাজ্য কাউন্সিলে। দলের রাজ্য সম্পাদক তখন অশোক ঘোষ। কয়েক মাসের মধ্যেই রাজ্য কমিটির বৈঠক ডেকে সেই সিদ্ধান্ত আবার বদলে নেওয়া হয়। এ বার রাজ্য সম্মেলনের সিদ্ধান্ত নরেনবাবুর আমলে বদলে গেল রাজ্য কাউন্সিলে এসে। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক নেতার কথায়, ‘‘পরিস্থিতির বিচারেই এই সিদ্ধান্ত।’’ জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) এবং বর্ধিত বিদ্যুৎ মাসুলের বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রস্তাবও নেওয়া হয়েছে কাউন্সিলে।