—প্রতীকী ছবি।
আলাদা আলাদা প্রতীকের চার জন প্রার্থী। একই বেঞ্চে বসে রয়েছেন বুথের সামনে। ঘরে ভোট চলছে নির্বিঘ্নে। ভোটাররা ঢুকছেন, বেরোচ্ছেন। প্রার্থীরা মশগুল নিজেদের মধ্যে হাসিঠাট্টায়।
যে মুর্শিদাবাদে ভোট পর্বের শুরু থেকেই রক্ত ঝরেছে, সেখানে এমন সব দলের প্রার্থীদের এমন সৌহার্দ্যের দৃশ্যে কিন্তু অবাক নয় সাগরদিঘির মণিগ্রাম। চার প্রার্থীই যে অনেক দিনের বন্ধু। একই পাড়ার ছেলে, বড় হওয়া একই সঙ্গে। শুধু রাজনীতির পথ সকলের আলাদা। কিন্তু তা বন্ধুত্বে কোনও প্রভাব ফেলে না। এমনকি প্রচারের সময়ও চার বন্ধু ঠিক করে নিয়েছিলেন, কে কবে কোন দিকে যাবেন। কেউ কারও পথে বাধা হয়ে দাঁড়াননি। অনন্ত মণ্ডল দাঁড়িয়েছেন ঘাসফুল প্রতীকে। চাকরি করেন সাগরদিঘি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। অনন্ত বলছেন, “২০১৩ সালে অরঙ্গাবাদে যাওয়ার পথে বাইক দুর্ঘটনায় পড়ি। তখন সাগরদিঘির প্রয়াত বিধায়ক সুব্রত সাহা যে ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিলেন, সেই কৃতজ্ঞতাবোধই ভোটের লড়াইয়ে টেনে এনেছে।” বাকি তিন দলের তিন প্রার্থীই তাঁর বন্ধু। অনন্ত বলছেন, ‘‘বন্ধুত্বের জন্যই ভোটের লড়াইয়ের তিক্ততাকে জয় করতে পেরেছি।’’
সিপিএমের প্রার্থী অক্ষয় রাজমল্লও কাজ করেন তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। বলছেন, “দলকে ভালবাসি তাই দাঁড়িয়েছি। তা বলে বন্ধুত্বকে ভুলি কী করে।’’ অক্ষয়ের কথায়, ‘‘গ্রামে বেশির ভাগই শিক্ষিত। সবাই আমাদের চেনেন।” বিজেপি প্রার্থী নির্মলকান্তি প্রামাণিকের বক্তব্য, ‘‘বাকি তিন জন ভাইয়ের মতো। বিজেপি ওদের রাজনৈতিক শত্রু। কিন্তু আমরা কেউ কাউকে তা ভাবি না। তাই প্রচার শেষে বসেছি সান্ধ্য আড্ডায়। বঙ্গ রাজনীতিতে এটার অভাব বলেই একটা নির্বাচনে ৩২টা খুন। ভাবা যায় ?”এই তিন জনের সঙ্গে রয়েছেন নির্দল প্রার্থী বুদ্ধদেব চক্রবর্তীও। তিনি হাই স্কুলের শিক্ষক। তাঁর কথায়, ‘‘রাজনীতির লড়াই থাকবে কেবল ভোটের বাক্সে। যে জিতবে, তাকে আমরা বাকি তিন জনই খুব খুশি মনেই মেনে নেব।’’