নির্বাচন কমিশনের দফতরে কয়েক দিন আগে আজ়াদ হিন্দ মঞ্চের তরফে ভিক্টরেরা। ফাইল চিত্র।
দল-বিরোধী কার্যকলাপ এবং শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে প্রাক্তন বিধায়ক আলি ইমরান রাম্জকে (ভিক্টর) শেষ পর্যন্ত বহিষ্কার করল ফরওয়ার্ড ব্লক। দলের মতাদর্শগত অবস্থান এবং রাজ্যে দল পরিচালনার পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে আগেই আজ়াদ হিন্দ মঞ্চ গড়ে পথে নেমেছেন ভিক্টরেরা। সেই মঞ্চকে সামনে রেখেই বামপন্থী পথে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন ভিক্টর।
বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে ফ ব-র সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস শনিবার জানিয়েছেন, ভিক্টরের কাজকর্মের জন্য দলের বাংলা কমিটি কারণ দর্শানোর ( শো-কজ়) চিঠি দিয়েছিল কিন্তু তিনি জবাব দেননি। বিষয়টি কেন্দ্রীয় কমিটির নজরে আনা হলে কেন্দ্রীয় কমিটি তাঁর ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি পাঠায়, তারও উত্তর ভিক্টর দেননি। বরং, এই সময়ের মধ্যে সংবাদমাধ্যম ও সমাজমাধ্যমে তিনি দল-বিরোধী বক্তব্য পেশ করে গিয়েছেন। দেবব্রতবাবুর বক্তব্য, ‘‘যে দল তাঁকে মতামত গঠন করতে শেখাল, বিধায়ক করল, সেই দলের প্রতীক বাতিল করার দাবিতে তিনি নির্বাচন কমিশনে গিয়েছিলেন। এতটাই অকৃতজ্ঞতা!’’
ভিক্টর যদিও পাল্টা অভিযোগ করেছেন, সম্পাদকমণ্ডলীর তিনি সদস্য হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে না জানিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক ডেকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনও সুযোগ দেওয়া হয়নি। এখনও চিঠির উত্তরের সময় না দিয়ে ‘মনগড়া’ তারিখ বসিয়ে এবং কেন্দ্রীয় কমিটির বৈবঠক না করেই বহিষ্কার করে দেওয়া হল। তাঁর দাবি, ফ ব যখন নতুন মতাদর্শ ও পতাকা গ্রহণ করেছে, তা নিয়ে গণভিত্তি প্রতিষ্ঠা করুক। তার পরে সিংহ প্রতীক ব্যবহার করবে। এটা নৈতিকতার প্রশ্ন। ভিক্টরের বক্তব্য, ‘‘আজ়াদ হিন্দ মঞ্চকে সামনে রেখেই অশোক ঘোষ, চিত্ত বসু, হেমন্ত বসুদের রাজনৈতিক শিক্ষায় বামপন্থী লড়াইকে আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করব।’’ দেবব্রতবাবু যদিও বলেছেন, দলীয় গঠনতন্ত্র অনুসারে নির্দিষ্ট ধারায় বহিষ্কারের এক্তিয়ার সাধারণ সম্পাদকের আছে।
তিন বারের প্রাক্তন বিধায়ক ভিক্টরের বাবা রমজান আলিও ছিলেন বিধায়ক। নির্দল বিধায়ক থেকে তাঁকে ফ ব-য় এনেছিলেন অশোকবাবুরা। নয়ের দশকে কলকাতায় বিধায়ক আবাসে রমজানের খুনের ঘটনায় রাজ্য রাজনীতি উত্তাল হয়েছিল। রমজানের ভাই হাফিজ আলম সৈরানিও প্রাক্তন বিধায়ক এবং ফ ব-র প্রথম সারির নেতা।