অশোক ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
দলের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক প্রয়াত অশোক ঘোষের জন্মশতবর্ষ উদ্যাপনের কর্মসূচি নিয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লক। শনিবার মহাজাতি সদনে হবে অনুষ্ঠান। সেই কর্মসূচিতে বামফ্রন্টের শরিক সংগঠনটি আমন্ত্রণ জানাল না কোনও অ-বাম দলকে। রাজ্যের শাসদকদল তৃণমূল, প্রধান বিরোধী দল বিজেপি বা কংগ্রেস— কাউকেই আমন্ত্রণ জানায়নি হেমন্ত বসু ভবন। তবে বামফ্রন্টের বাইরে থাকা বিভিন্ন বামপন্থী দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে তারা।
দলের বাংলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অশোকদা সারাজীবন বামপন্ধী রাজনীতি করেছেন। আমরা চেয়েছি তাঁর জন্মশতবর্ষে বামপন্থীরাই তাঁকে নিয়ে আলোচনা করুন, তাঁর রাজনৈতিক জীবন নিয়ে বিভিন্ন দিক থেকে আলোকপাত করুন।’’
যে কোনও রাজনৈতিক নেতার জন্মশতবর্ষ মানে তাঁকে নিয়ে আলোচনা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, এই ধরনের অনুষ্ঠানে বিপরীত মেরুর রাজনীতিকরাও যোগ দেন। কিন্তু ফরওয়ার্ড ব্লক সেই সুযোগ রাখছে না। কেন ডাকা হচ্ছে না অন্য দলগুলিকে? জবাবে নরেন বলেন, ‘‘অশোকদা সম্পর্কে বর্তমান শাসকদল ও তাঁদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু আমরা চাইনি তাঁর জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠানে এমন কিছু হোক, যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়।’’
উল্লেখযোগ্য বিযয় হল, সিঙ্গুর-পর্বে ২০০৭ সালে এই মহাজাতি সদনেই যে সর্বদল বৈঠক ডেকেছিলেন অশোক ঘোষ, তা বামফ্রন্টের অস্বস্তির কারণ হয়েছিল। ফ্রন্টের মধ্যে এবং সরকারের শরিক হয়েও টাটাদের কারখানার বিরোধিতা করেছিল তারা। একটি জনসভা থেকে দলের তৎকালীন রাজ্য সম্পাদক অশোক বলেছিলেন, ‘‘সিঙ্গুর থেকে ওই কারখানা সরিয়ে কলাইকুন্ডাতে নিয়ে যাওয়া হোক।’’ শরিকি অসন্তোষ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছিল সিপিএমও। সেই সময়ে তৎকালীন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধীও সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে মধ্যস্থতার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বরফ গলেনি। শেষ পর্যন্ত সর্বদল বৈঠক ডেকেছিলেন বর্ষীয়ান অশোক ঘোষ। মহাজাতির সেই বৈঠকেও সিপিএমের সঙ্গে মতবিরোধ হয় তৃণমূলের। ওয়াক আউট করে বেরিয়ে এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মহাজাতিতেই শনিবার অশোকের জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠান করবে ফরওয়ার্ড ব্লক। কিন্তু আমন্ত্রণে ডান-বাম গণ্ডি কেটে দেওয়া হল।