গৌতম মিত্র
সিপিএমের প্রাক্তন এক যুব নেতাকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। নিহত গৌতম মিত্র (৫০) অবিভক্ত মেদিনীপুরে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফের জেলা সভাপতি ছিলেন। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যও হয়েছিলেন। তবে, তাঁকে খুনের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল।
গৌতমবাবুর বাড়ি মেদিনীপুর সদর ব্লকের খয়েরুল্লাচকে। গত সোমবার ওই এলাকায় তৃণমূল কর্মী শুভঙ্কর দে-র সঙ্গে বচসা বাধে সিপিএম কর্মী শম্ভু দে-র। শম্ভুকে মারধরের অভিযোগও ওঠে। গৌতমবাবু শম্ভুর পাশে দাঁড়ান। পুলিশ অভিযোগ না নিলে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এর জেরেই মঙ্গলবার সকালে গৌতমবাবু যখন খয়েরুল্লাচকের বাজারের দিকে আসেন, তখনই মেদিনীপুর সদর ব্লকে তৃণমূলের সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ কর্মকারের নেতৃত্বে তাঁর উপরে হামলা হয় বলে অভিযোগ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় গৌতমবাবুকে ভর্তি করা হয়েছিল কলকাতার এসএসকেএমে। বুধবার রাতে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ জানান গৌতমবাবুর ভাই অলোক মিত্র। অভিযোগে বিশ্বজিৎ ছাড়াও নাম রয়েছে ইন্দ্রজিৎ কর্মকার এবং দলীয় কর্মী শুভঙ্কর দে-র। অলোকবাবুর দাবি, “বিশ্বজিতের নেতৃত্বে তৃণমূলের ছেলেরা দাদাকে রাস্তায় ফেলে কিল-ঘুষি মারে।’’ খুনের ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তবে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত কেউই গ্রেফতার হয়নি।
গোটা ঘটনায় সরব সিপিএম। দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘‘গোটা রাজ্যে তৃণমূলের সন্ত্রাস চলছে। প্রতিবাদ ও প্রতিরোধই সন্ত্রাস রোখার একমাত্র পথ।’’ অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক তরুণ রায়।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি অবশ্য দাবি করেছেন, “সিপিএমের হাতে এখন কোনও বিষয় নেই। তাই এই ঘটনার দায় তৃণমূলের ঘাড়ে চাপাচ্ছে। মারধরের কোনও ঘটনাই ঘটেনি।’’ তা হলে গৌতমবাবু গুরুতর জখম হলেন কী করে? ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত বিশ্বজিতের দাবি, “আমার সঙ্গে গৌতমের কথা কাটাকাটি হয়েছিল। তখনই রাস্তায় পড়ে গিয়ে চোট পান। কেউ ওঁকে মারতে চায়নি।’’
রাজ্যে পালাবদলের পরে অনেকটাই নিষ্ক্রিয় হয়ে যান গৌতমবাবু। দলীয় সদস্যপদ ছাড়া আর কোনও পদে ছিলেন না। তবে, এলাকায় দলীয় কর্মসূচিতে যেতেন। গত বিধানসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী তাপস সিংহের প্রচারে পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরে গিয়েছিলেন গৌতমবাবু। সেচ দফতরের কর্মী হওয়ায় কো-অর্ডিনেশন কমিটির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।