TMC

প্রাক্তন তৃণমূল প্রধানকে বোমা মেরে কুপিয়ে খুন

শনিবার রাত ৯টা নাগাদ উলিয়াড়ার বেলিয়াড়া গ্রামের ঘটনা। মৃত শেখ বাবর আলির (৫০) বাড়ি বেলিয়াড়া গ্রামেই। তৃণমূলের গোষ্ঠিদ্বন্দ্বেই এই খুন বলে অভিযোগ নিহতের পরিজন ও দলের একাংশের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২০ ০৩:৩৭
Share:

(বাঁ দিকে) শেখ বাবর আলি। (ডান দিকে) এই বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয় বাবর আলির। দেহ। দরজায় বোমার আঘাতের চিহ্ন। নিজস্ব চিত্র

বোমা ছুড়তে ছুড়তে আসা দুষ্কৃতীদের তাড়ায় একটি বাড়িতে ঢুকে পড়েও বাঁচতে পারলেন না বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরের উলিয়াড়া পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রাক্তন প্রধান। সেই বাড়ির দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে তাঁকে বোমা মেরে ও কুপিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

শনিবার রাত ৯টা নাগাদ উলিয়াড়ার বেলিয়াড়া গ্রামের ঘটনা। মৃত শেখ বাবর আলির (৫০) বাড়ি বেলিয়াড়া গ্রামেই। তৃণমূলের গোষ্ঠিদ্বন্দ্বেই এই খুন বলে অভিযোগ নিহতের পরিজন ও দলের একাংশের।

বাবরের ছেলে শেখ ফিরোজ উলিয়াড়া পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান তাসমিনা খাতুনের স্বামী রহিম মণ্ডল-সহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে রবিবার খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) প্রিয়ব্রত বক্সী বলেন, “পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রহিম পলাতক। তাঁর খোঁজ চলছে।’’ যদিও এ দিন সকালে রহিম ফোনে আনন্দবাজারের কাছে দাবি করেন, ‘‘ওরা নিজেরাই বোমা ফাটাতে গিয়ে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।’’

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে বিষ্ণুপুর আদালত ধৃত শেখ মুবারক ও আবু বক্করকে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজত এবং শেখ জামাল, শেখ কুরবান ও সওকত মণ্ডলকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।

কী কারণে গোলমাল? বিজেপির রাজ্য নেতা তথা বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকারের অভিযোগ, ‘‘ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে বিষ্ণুপুরে তৃণমূল কর্মীদের গণ্ডগোল প্রকাশ্যে আসছে।’’ তৃণমূলের বিষ্ণুপুর ব্লক সভাপতি শ্যাম মুখোপাধ্যায়েরও দাবি, ‘‘তৃণমূলের ‘নামাবলি’ গায়ে দুষ্কৃতীরা তৃণমূলকেই শেষ করছে।’’ আর নিহতের ছোট মেয়ে শিল্পা খাতুনের দাবি, ‘‘আততায়ীরা এক সময়ে সিপিএম করত।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্রের অভিযোগ, ‘‘পালাবদলের পরে আমাদের কর্মীদের মেরেধরে তৃণমূলে নাম লেখানো হয়। ওদের দায়িত্ব এখন তৃণমূলেরই।’’ সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা বলেন ‘‘পুলিশি তদন্তেই সত্যিটা সামনে আসবে।’’

২০১৩-তে বাবর পঞ্চায়েত প্রধান হলেও তিন বছর পরে দলেরই বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর আনা অনাস্থায় তাঁকে সরতে হয়। তারপর থেকে তিনি অধিকাংশ দিন বিষ্ণুপুর শহরে থাকতেন। তাঁর মেয়ে শিল্পার অভিযোগ, ‘‘বাবা ইদে বাড়ি ফিরেছিল। সন্ধ্যায় সবাই গল্প করছিলাম। হঠাৎ পার্টি অফিসে বোমাবাজি ও ভাঙচুর শুরু হতেই বাবা উঠে পড়ে। তখনই রহিম মণ্ডলের নেতৃত্বে কয়েক জন বাড়িতে ঢুকে বাবাকে বোমা মারে। আহত অবস্থায় বাবা পালায়। কিন্তু পিছু নেয় দুষ্কৃতীরা।’’

দৌড়ে কিছুটা দূরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে ঢোকেন বাবর। সেই বাড়ির বধূ আজমিরা বিবির দাবি, ‘‘বাবর মামা একটি ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। দুষ্কৃতীরা বোমা মেরে দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকে। বেশ কয়েকটি বোমা ফাটিয়ে আলো নিভিয়ে পালায়। টর্চ জ্বেলে দেখি, মামার মুখ ও বুকে বোমার আঘাত। গলায় ছুরির কোপ। পড়শিদের ডাকতে গিয়ে জ্ঞান হারাই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement