—প্রতীকী ছবি।
রাজস্থানের আদলে পশ্চিমবঙ্গেও মুক্ত কারাগার বা ‘ওপেন জেল’-এর জন্য সওয়াল করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মদন বি লোকুর। সোমবার একটি অনুষ্ঠানে তাঁর দাবি, “বন্দির সংশোধন এবং সামাজিক পুনর্বাসনে এই ব্যবস্থার বিকল্প নেই। মুক্ত জেলে থাকা বন্দিদের ফের অপরাধ ঘটানোর নমুনা নেই বললেই চলে!”
বিভিন্ন সামাজিক ন্যায়মূলক বিচারের জন্য পরিচিত বিচারপতি লোকুর ২০১৭, ২০১৮ সালেও দেশের বেশির ভাগ সংশোধানাগারের ভিড়ে ঠাসা, অপরিচ্ছন্ন তথা অমানবিক পরিবেশের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। লোকুরের রায়ের পরে দেশের নানা রাজ্যে মুক্ত কারাগার তৈরির প্রবণতা বাড়ে।
সংশোধনাগার বিষয়ক একটি গবেষণা মঞ্চ ‘পার’-এর প্রতিষ্ঠাতা স্মিতা চক্রবর্তীর একটি রিপোর্টের সুপারিশের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ আদালত দেশের সর্বত্র মুক্ত কারাগার-এর সম্প্রসারণের কথা বলেছিল। স্মিতার মতে, “ওপেন জেলে সরকারের ১৪ গুণ খরচ কমবে।”
রাজস্থানের অবসরপ্রাপ্ত ডিজি অজিত সিংহ বলেন, “৫-১০ শতাংশ অপরাধপ্রবণ ব্যক্তিকে বাদ দিলে বেশির ভাগ অপরাধীই মুহূর্তের ভুলে দুষ্কর্ম করে বসে। রাজস্থানে পাঁচ বছরের সাজা খাটার পরে ভাল আচরণের বন্দিদের ওপেন জেলে পাঠানো হয়। প্রতিটি জেলা মিলিয়ে রাজস্থানে ৪২টি মুক্ত কারাগার। সেখানে বন্দিরা সপরিবার থেকে নিজের প্রতিভা বা যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করেন। সারা দিন জেলের বাইরে কাজ করে অনেকেই ফিরে আসেন।”
রাজস্থানে মুক্ত কারাগারগুলিতে ১৩৬৭ জন আবাসিক। এর পাশে পশ্চিমবঙ্গে লালগোলা, মেদিনীপুর, দুর্গাপুর, রায়গঞ্জের ‘ওপেন জেল’-এ সাকুল্যে ৩০০ জন বন্দি। এ রাজ্যে দশ বছর জেল খাটলে কেউ মুক্ত কারাগারে যেতে পারে। এবং তাতে সপরিবার থাকার সুযোগ কম।
অজিতের মতে, “কোন অপরাধীরা মুক্ত জেলে থাকবে, তা সরকারের বিবেচনা সাপেক্ষ। যেমন ধর্ষণের অপরাধীর এই সুযোগ পাওয়ার কথা নয়।”