মতুয়াদের সমর্থন তৃণমূলে ফেরাতে কলকাতা বড় সমাবেশ মমতা বালা ঠাকুরের। ফাইল চিত্র।
পাঁচ রাজ্যের ভোট মিটলেই নাগরিক সংশোধনী আইনের (সিএএ) রুল তৈরি বিষয়ে পদক্ষেপ করবে কেন্দ্রীয় স্বারাষ্ট্র মন্ত্রক। আর সেই রুল তৈরি হয়ে গেলে মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোটের বড় অংশ চলে যেতে পারে গেরুয়া শিবিরের দিকে। এমন আশঙ্কা থেকে এ বার মতুয়া ভোটের অভিমুখ ঘোরাতে অরাজনৈতিক মঞ্চ থেকে উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্বের দাবিতে সরব হতে চলেছেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর।
আগামী ৩ অক্টোবর কলকাতায় এক সমাবেশের ডাক দিয়েছেন তিনি। সেখানেই তিনি সরব হবেন উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্বের দাবিতে। সঙ্গে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বিরুদ্ধেও তিনি মুখ খুলবেন বলেই সূত্রের খবর। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোট থেকেই পশ্চিমবঙ্গের মতুয়াদের ভোট পেতে শুরু করে বিজেপি। ২০১৯ সালে মতুয়াদের বড় অংশের সমর্থন নিয়ে তারা বনগাঁ ও রানাঘাট লোকসভা দখল করে। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপির ভরাডুবির সময়েও মতুয়া জনতার সমর্থন ছিল গেরুয়া শিবিরের দিকেই।
২০১৯ সাল মতুয়াদের দীর্ঘ দিনের নাগরিকত্বের দাবিকে মান্যতা দিতে সংসদের দুই কক্ষেই নাগরিক সংশোধনী বিল পাশ হয়। কিন্তু গত চার বছরে এই আইনের রুল তৈরি করা যায়নি। কিন্তু সম্প্রতি রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষ নেতা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে এ বিষয়ে উদ্যোগী হতে অনুরোধ করেছেন। বিজেপি সূত্রে খবর, শাহ ওই বিজেপি নেতাকে বিষয়টির দ্রুত নিষ্পত্তির আশ্বাস দেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, চলতি বছর শীতকালীন অধিবেশনের সময়েই সিএএ-র রুল তৈরি হয়ে যাবে।
বাংলার শাসকদলের আশঙ্কা, এই রুল তৈরি হয়ে গেলে মতুয়া সমাজের বড় অংশের সমর্থন যেতে পারে বিজেপির দিকে। তাই সময় থাকতেই মতুয়া ভোটের বাতাস নিজেদের পালে ফেরাতে চায় তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই এ বার বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’-র পক্ষে সমর্থন চেয়ে রানি রাসমনি রোডে জনসভা করবেন প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা। বাংলার রাজনীতির কারবারিদের কথায়, গাইঘাটার ঠাকুরবাড়ি এখন স্পষ্ট দুই শিবিরে বিভাজিত। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর ও তাঁর বিধায়ক দাদা বিজেপি শিবিরে রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গেই রয়েছেন, তাঁদের বাবা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মঞ্জুল্কৃষ্ণ ঠাকুর। আর বিপরীত শিবিরে রয়েছেন মমতাবালা। তাই শাসক শিবির এ ক্ষেত্রে মমতাবালাকেই মতুয়া ভোট ফেরাতে ময়দানে নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে বিজেপি শিবিরের দাবি, কলকাতায় এমন সভা করে আদৌ কোনও লাভ নেই। কারণ সিএএ রুল তৈরি হয়ে গেলে মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে যে সমস্যা রয়েছে, তা পুরোপুরি মিটে যাবে। তাই এ ভাবে কলকাতার রাস্তায় জনসভা করে প্রাক্তন সাংসদ বা দলগত ভাবে তৃণমূল কোনও লাভ হবে না।