জিপিএস ট্রান্সমিটার বসিয়ে সুন্দরবনের নদীতে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে কচ্ছপগুলিকে। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা
কচ্ছপের শরীরে জিপিএস ট্রান্সমিটার লাগিয়ে নদী-খাঁড়িতে ছাড়া হল। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের উদ্যোগে বুধবার বাটাগুড় বাসকা বা পোড়া কাঠা নামে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির ১০টি কচ্ছপের শরীরে রেডিও ট্রান্সমিটার বসিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশে ছাড়া হয়েছে। বিলুপ্তপ্রায় এই কচ্ছপের গতিবিধি, বংশবিস্তার এবং পরিবেশের সঙ্গে তারা কী ভাবে সামঞ্জস্য রক্ষা করছে— সে সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতেই এদের গতিবিধির উপরে নজরদারি চালানোর পরিকল্পনা করেছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প।
বন দফতর সূত্রের খবর, এক সময়ে সুন্দরবন থেকে শুরু করে মায়ানমার, তাইল্যান্ড হয়ে মালয়েশিয়া উপকূল পর্যন্ত এই বিশেষ ধরনের কচ্ছপের বসতি ছিল। কিন্তু বর্তমানে এরা বিলুপ্তপ্রায়। সজনেখালিতে একটি পুকুর তৈরি করে সেখানে কয়েক বছর ধরে এই প্রজাতির কচ্ছপের সংরক্ষণ ও প্রজননের ব্যবস্থা করেছে ব্যাঘ্র প্রকল্প। ১২টি কচ্ছপকে সংরক্ষণের পরে আপাতত তাদের ছানাপোনা-সহ মোট সংখ্যাটা ৩৭০। দোবাঁকি, খাটোয়াঝুড়ি ও হরিখালিতেও এই প্রজাতির কচ্ছপ সংরক্ষণ ও প্রজননের ব্যবস্থা করেছে বন দফতর।
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, প্রজননে সক্ষম বাটাগুড় বাসকা প্রজাতির ১০টি কচ্ছপকে সুন্দরবনের নদীতে এ দিন ছাড়া হল। যার মধ্যে ৭টি স্ত্রী ও ৩টি পুরুষ কচ্ছপ। এদের গতিপ্রকৃতির উপরে নজরদারি চালাতে শরীরে জিপিএস ট্রান্সমিটার বসানো হয়েছে।
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের সহযোগী সংস্থা টিএসএ গোটা প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধান করছে। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন বলেন, ‘‘এই বিলুপ্ত প্রজাতির কচ্ছপের সফল প্রজনন ইতিমধ্যেই আমরা করেছি। এরা কোন পরিবেশে থাকতে ভালবাসে, কী ভাবে বেঁচে থাকে এবং কী ভাবে প্রকৃতিতে নিজেদের বংশবিস্তার করে— সে সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহ করতে জিপিএস ট্রান্সমিটার তাদের শরীরে বসানো হয়েছে।’’ আগামী দিনে আরও বাটাগুর বাসকা প্রজাতির কচ্ছপ সুন্দরবনের নদী-খাঁড়িতে ছাড়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ দিন সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর তাপস দাস, সুন্দরবন বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের যুগ্ম ডিরেক্টর অজয়কুমার দাস, ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন-সহ অন্যান্য বনাধিকারিকদের উপস্থিতিতেই কচ্ছপগুলি ছাড়া হল।