নোদাখালির বিস্ফোরণস্থলে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। বৃহস্পতিবার। ছবি: অরুণ লোধ।
নোদাখালির অসীম হালদার নিজের বসতবাড়ির ভিতরেই বাজির অবৈধ কারখানা চালাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। বুধবারের বিস্ফোরণে অন্য দু’জনের সঙ্গে তাঁর মৃত্যু হয়। ময়না-তদন্ত হলেও অসীমবাবু এবং তাঁর আত্মীয়া কাকলি মিদ্দের দেহ নিতে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত কেউ আসেননি। মৃত কারখানা-মালিকের স্ত্রী-পুত্রের খোঁজও মেলেনি। এ দিন দুপুরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নস্করপুর পঞ্চায়েতের মোহনপুরের আর্যপাড়ায় বিস্ফোরণস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন ফরেন্সিক দলের অফিসারেরা। সিআইডি ও দমকলের অফিসারেরাও এ দিন অকুস্থল পরিদর্শন করেন।
বুধবার ওই বেআইনি বাজি কারখানার বিস্ফোরণে অসীমবাবু, কাকলিদেবী ছাড়াও অতিথি হালদার (৪০) নামে কারখানার এক কর্মীর মৃত্যু হয়। স্ত্রী-পুত্রের খোঁজ না-মেলায় অসীমবাবুর অন্য আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
বিস্ফোরণের পরে পরেই অকুস্থলে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শুধু অসীমবাবু নয়, অন্য কয়েক জনও কয়েক বছর ধরে ওই এলাকায় অবৈধ ভাবে বাজির কারখানা চালাচ্ছিলেন। ডায়মন্ড হারবার পুলিশ-জেলার আধিকারিক ও জেলা প্রশাসনের কর্তারা এ দিন জানান, ওই এলাকায় অবৈধ বাজির কারখানাগুলির খোঁজ চলছে। পুলিশ ও প্রশাসন যৌথ ভাবে বাসিন্দাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই এলাকায় বাজি তৈরির শতাধিক ছোট ছোট কারখানা রয়েছে এবং তার অধিকাংশই বসতবাড়ির ভিতরে। অসীমবাবুও নিজের বাড়িতেই বাজির কারখানা চালাতেন। এ দিন ঘটনাস্থল থেকে রকেট বাজির কিছু নমুনা উদ্ধার হয়েছে। তদন্তকারীদের অনুমান, ওই বাড়িতে আতশবাজি ও বারুদ মজুত ছিল এবং সেগুলিতে একই সঙ্গে আগুন ধরে যাওয়ায় তীব্র বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের জেরে আশপাশের ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন বাড়ির বাসিন্দারা ক্ষতিপূরণের দাবি তুলেছেন।
আসন্ন পুরসভা ভোটের জন্য ওই কারখানায় বোমা তৈরি করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বিজেপি নেতারা। তবে এই অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।
রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এ দিন নোদাখালির ঘটনায় এনআইএ তদন্ত চেয়ে চিঠি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। বুধবার তিনি দিল্লিতে বসে এনআইএ তদন্তের দাবি করেছিলেন।