রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্তের অভিযোগ, ‘‘ছুটি কোনও সমাধান নয়।’’ গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
ছুটি মানেই আরাম নয়! তাপে নাকাল বাংলায় গরমে বাড়তি ছুটি পাওয়া পড়ুয়াদের মনে করিয়ে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ছাত্রছাত্রীদের ‘সুকান্ত স্যরের’ পরামর্শ— স্কুল ছুটি দিলেও যেন বাড়িতে পড়াশোনা বন্ধ না হয়। গরমে পড়াশোনারও ‘ছুটি’ যাতে না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক করে সুকান্তের পর্যবেক্ষণ, ‘‘না হলে বড্ড ক্ষতি হয়ে যাবে।’’
মাত্রাছাড়া গরমে ছাত্রছাত্রীদের শারীরিক সুস্থতার কথা মাথায় রেখেই রবিবার কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের স্কুল-কলেজগুলিতে ছুটি দিয়েছে রাজ্য সরকার। তার আগে উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলা বাদে রাজ্য জুড়ে আগামী ২১ এপ্রিল পর্যন্ত তাপপ্রবাহ পরিস্থিতির ঘোষণা করেছিল আবহাওয়া দফতর। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্কুল কলেজগুলিতে গ্রীষ্মাবকাশ এগিয়ে আনার ঘোষণা করেন। রবিবার নবান্নের তরফে এ ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করার পর সোমবার থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ কার্যকরও হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত সরকারি এবং কিছু বেসরকারি স্কুলে। আর এই ছুটি দেওয়া নিয়েই সরব হয়েছে রাজ্যে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্তের অভিযোগ, ‘‘ছুটি কোনও সমাধান নয়, ক্ষতিকারক সংস্কৃতি।’’ তাই ছুটি পাওয়া ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকদের সুকান্ত মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘বাংলার আগামী প্রজন্মকে পিছিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত সফল হতে দেবেন না।’’ এ ব্যাপারে পড়ুয়াদের জন্য অভিভাবক এবং শিক্ষকদের এগিয়ে আসার পরামর্শ দিয়ে সুকান্তের আর্জি, ‘‘অভিভাবকরা নজর রাখুন। রাষ্ট্রবাদী শিক্ষকরা যতটা এবং যে ভাবে সম্ভব পড়ুয়াদের পাশে থাকুন।’’
গৌরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানির শিক্ষক সুকান্ত। পড়ুয়াদের বাড়তি ছুটির কথা শুনে তাই শিক্ষকসুলভ ভাবেই তিনি তাঁর পরামর্শ দিয়েছেন। সোমবার সকালেই পর পর দু’টি টুইট করে ছাত্রছাত্রীদের আগাম করণীয় কী, তার টিপ্স দিয়েছেন অধ্যাপক সুকান্ত। বাংলার পড়ুয়াদের তাঁর পরামর্শ— ‘‘ছাত্রছাত্রীদের বলব, বাড়িতে লেখাপড়া যেন বন্ধ না হয়।... গরমের ছুটি যেন আরামের না হয়!’’
তবে একই সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ রেখে বাড়তি গরমের ছুটি দেওয়া প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। রবিবার মমতার ওই নির্দেশের পরও বেশ কিছু বেসরকারি স্কুল সময় বদলে ভোরবেলায় ক্লাস চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্কুল-কলেজ বন্ধ রেখে অনলাইনে ক্লাস করানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছে কোনও কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেই প্রসঙ্গ তুলেই ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন সুকান্তের প্রশ্ন, ‘‘বেসরকারি স্কুলে অনলাইন বা মর্নিং ক্লাস হলে সরকার পারবে না কেন?’’ তবে সুকান্তের সেই প্রশ্নের কোনও জবাব মেলেনি রাজ্য সরকারের তরফে।