সিবিআই দফতরে বাঁকুড়া থেকে আসা পাঁচ প্রাথমিক শিক্ষক। —নিজস্ব চিত্র।
আদালতের নির্দেশে চাকরি পেয়েছেন, অথচ পর্ষদের খাতায় এখনও নাম ওঠেনি! এখনও পর্ষদের খাতায় তাঁদের ‘টেট অনুত্তীর্ণ’ হিসাবে দেখানো হচ্ছে। মেলেনি টেট পাশের কোনও শংসাপত্রও। বুধবার কলকাতার সিবিআই দফতরে হাজিরা দেওয়ার পর বেরিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন বাঁকুড়ার পাঁচ শিক্ষক। অভিযোগ, পর্ষদের গাফিলতিতেই তাঁদের এই হেনস্থা।
বাঁকুড়ার পাঁচ শিক্ষককে বুধবার ডেকে পাঠিয়েছিল সিবিআই। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ কেন্দ্রীয় সংস্থার অফিসে তাঁরা হাজিরা দেন। কিছু ক্ষণ পর অফিস থেকে বেরিয়েও আসেন। বেরোনোর পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পর্ষদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন ওই শিক্ষকেরা। অভিযোগ, তাঁদের টেট পাশের শংসাপত্র দেওয়া হয়নি। পর্ষদের খাতাতেও টেট উত্তীর্ণ হিসাবে তাঁদের নাম নেই। সিবিআইকে পর্ষদ সঠিক তথ্য দেয়নি বলে দাবি করেছেন এই পাঁচ শিক্ষক। সেই কারণেই তাঁদের ডাকা হয়েছিল।
২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় ভুল প্রশ্নের অভিযোগ তুলে ২০১৭ সালে যে মামলা হয়েছিল, তার ভিত্তিতে ২০২১ সালে কলকাতা হাই কোর্ট ১৭৫ জন চাকরিপ্রার্থীকে অবিলম্বে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল। অভিযোগ, নিয়োগ হলেও সকলে পর্ষদের কাছ থেকে টেটের শংসাপত্র পাননি। ৪৫ জন প্রাথমিক শিক্ষকের নামের পাশে এখনও পর্ষদের খাতায় ‘অনুত্তীর্ণ’ বলেই লেখা আছে। সিবিআইয়ের কাছে যা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। তা দূর করতে এই শিক্ষকদের ডেকে পাঠানো হয়।
সিবিআই দফতরে পৌঁছে যথাযথ নথি এবং তথ্য দিয়ে এসেছেন বাঁকুড়ার শিক্ষকেরা। সিবিআই তাঁদের বক্তব্যে সন্তুষ্ট বলেও জানান। কিন্তু পর্ষদ সঠিক তথ্য দিলে বাঁকুড়া থেকে কলকাতায় আসা-যাওয়ার এই হেনস্থা হত না, দাবি শিক্ষকদের।
বুধবার যাঁদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল, তাঁরা হলেন স্বাধীনকুমার পাল (কাশতোড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়), সায়ন্তনী বেজ (নাকাইজুরি তিলিপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়), প্রিয়াঙ্কা নন্দী (বেলশূল্যা প্রাথমিক বিদ্যালয়), প্রিয়াঙ্কা লাহা (কালীতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়) এবং গণপতি মাহাতো (দাঁড়কেডি জে বি বিদ্যালয়)।
সিবিআই দফতর থেকে বেরিয়ে গণপতি বলেন, ‘‘আমরা টাকা দিয়ে চাকরি পাইনি। আমরা যোগ্য, প্রশিক্ষিত এবং টেট উত্তীর্ণ প্রার্থী। ভুল প্রশ্নের মামলায় আমাদের নম্বর বেড়েছিল। তার পরেই আদালতের নির্দেশে চাকরি পেয়েছি। সিবিআইকে সেটা জানিয়েছি। পর্ষদের গাফিলতির কারণে আমাদের এখানে আসতে হল। সমাজ হয়তো এখন আমাদের অন্য চোখে দেখবে।’’
সিবিআই দফতর থেকে পর্ষদের অফিসে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান ওই শিক্ষক। পর্ষদের কাছে তাঁরা টেটের শংসাপত্রের দাবি জানাবেন। ‘উত্তীর্ণ’ হিসাবে নাম তোলার আবেদনও জানানো হবে।