পাশাপাশি: বানারহাটে ধর্মঘটের সমর্থনে একসঙ্গে বাম-বিজেপি সমর্থকেরা। ছবি: রাজকুমার মোদক
যৌথ মঞ্চের ডাকা চা বাগান বন্ধের প্রথম দিন মিশ্র সাড়া পড়ল তরাই-ডুয়ার্সের চা বাগানগুলিতে৷ বেশ কিছু বাগানে কাজ থমকে গেলেও, খোলা ছিল অনেক বাগান। কিছু বাগানে আবার আংশিক কাজ হয়েছে৷
ন্যূনতম মজুরির দাবিতে সোমবার ও আজ মঙ্গলবার দু’দিনের চা বাগান বন্ধের ডাক দিয়েছে যৌথমঞ্চ৷ মঙ্গলবার সাধারণ ধর্মঘটেরও ডাক দিয়েছে মঞ্চ। কিছু বাগানে মিছিল বের করেন আন্দোলনকারীরা। তরাইয়ের কমলা চা বাগানে পিকেটিং করে জোর করে বাগান বন্ধের চেষ্টার অভিযোগে চার সিটু নেতাকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। এ দিন রাতে তাদের ছাড়ার দাবিতে ফাঁসিদেওয়া থানায় জমায়েত করে বিক্ষোভ দেখান বাম নেতা কর্মীরা। পাহাড়ের ৮২টি চা বাগানে কাজ হয়নি।
এ দিন পুলিশের বিরুদ্ধে জোর করে বন্ধ ভাঙার চেষ্টার অভিযোগ তোলেন যৌথমঞ্চের নেতারা৷ যার জেরে জলপাইগুড়ির করলাভ্যালি, বানারহাট ও চালসা, সুকনার একাধিক বাগানে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়৷ জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশ বামেদের একটি গাড়ি আটক করে বলে অভিযোগ৷
জলপাইগুড়ি জেলায় ডুয়ার্স ব্র্যাঞ্চ ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের অধীনে ৫৫টি বাগান রয়েছে৷ ওই অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা জানিয়েছেন, তাঁদের ৫৫টি বাগানের মধ্যে ১১টিতে এ দিন স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়েছে৷ প্রায় ২৬টি বাগানে আংশিক কাজ হয়েছে৷ আর ১৮টি বাগানে বন্ধ হয়েছে৷
আইটিপিএ-র কর্তাদের হিসেব অনুযায়ী, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার মিলিয়ে ৩৫টি বাগানের মধ্যে ৯টিতে বন্ধ হয়েছে৷ তিনটিতে সাপ্তাহিক ছুটি ছিল৷ বাকি ২৩টির কোনটিতে আংশিক তো কোনটিতে স্বাভাবিক কাজ হয়েছে৷ যদিও যৌথমঞ্চের আহ্বায়ক সম্পাদক জিয়াউল আলম বলেন, ‘‘দলমত নির্বিশেষে শ্রমিকরা এ দিনের ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন৷’’
প্রশাসনের দাবি, তরাইয়ের প্রায় ৩০ টি বাগানে ৭৫ থেকে ১০০ শতাংশ হাজিরা ছিল শ্রমিকদের। ৫টি বাগান পুরোপুরি বন্ধ ছিল। মঞ্চের সদস্য আইএনটিইউসি নেতা অলোক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বাগানের আন্দোলন সফল। তবে সাধারণ ধর্ঘঘটে থাকছি না।’’ যা শুনে আইএনটিটিইউসি নেতা নির্জল দে বলেন, ‘‘ শ্রমিকরা নিজেদের ভাল বুঝতে পারছেন। বন্ধ করে শ্রমিকদের হাজিরা যাচ্ছে। এর থেকে আলোচনায় সমস্যা মিটবে।’’
তবে চা শিল্পে দু’দিনের টানা বন্ধে ক্ষুব্ধ মালিকপক্ষ৷ আইটিপিএ-র উপদেষ্টা অমিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ন্যূনতম মজুরি নিয়ে একটা আলোচনা চলছে৷ তাই এই সময় এ ধরণের বন্ধ ডেকে চা শিল্পকে ক্ষতির মুখে ফেলে দেওয়াটা অবাঞ্ছিত৷’’