রাহুল সিনহা, ফিরহাদ হাকিমের মধ্যে রাজনৈতিক তরজা। —ফাইল ছবি
তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের কেউ নন। লোকসভা নির্বাচনে জিততে পারেননি, ফলে জনপ্রতিনিধিও নন। কিন্তু তিনি জানেন, পুজোর আগেই তৃণমূলের একাধিক নেতা-মন্ত্রী গ্রেফতার হবেন। শনিবার রামপুরহাটে এক সাংবাদিক বৈঠকে ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহের।
পাল্টা কটাক্ষ করে তৃণমূল নেতা তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের মন্তব্য, ‘‘রাহুলবাবু তো বিজেপির লোক। আর পুলিশ তো সরকারের অধীনে! রাহুলবাবু জানলেন কী করে কে কখন গ্রেফতার হবেন? কেন্দ্রে বিজেপির সরকার কী ভাবে চলে, রাহুলবাবুর কথাতেই তা স্পষ্ট।’’ ফিরহাদের আরও বক্তব্য, ‘‘সিবিআই দিয়ে ধমকে চমকে আমাদের সাংসদদের দিয়ে মোদী-নাম করানো যাবে না।’’
এ দিন দুপুরে রাহুলবাবু বলেন, ‘‘চুরি, চিট ফান্ড এ সব কাণ্ডে এ বার একের পর এক গ্রেফতার শুরু হবে। তৃণমূলের অনেক নেতা-মন্ত্রীই পুজো দেখতে পাবেন না। তার আগেই জেলে ঢুকে যাবেন। জেলে বসেই তাঁদের পুজো দেখতে হবে।’’
বিজেপি নেতাদের মুখে এ কথা অবশ্য নতুন নয়। ২০১৪ সালে কলকাতায় সভা করতে এসে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের উপস্থিতিতে তৎকালীন রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ বলেছিলেন, ‘ভাগ মদন, ভাগ মুকুল।’ তৎকালীন তৃণমূল নেতা মুকুল রায় এখন বিজেপিতে। প্রথম মোদী সরকারের আমলে রাজ্যে এবং কেন্দ্রে সারদা, রোজভ্যালি, নারদ-কাণ্ড নিয়ে বিজেপি নেতারা বহু কথা বলেছেন। কিন্তু সংসদে বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণীর নেতৃত্বে তৈরি হওয়া এথিক্স কমিটি এ বিষয়ে একটিও বৈঠক করেনি। সে সময় একাধিকবার প্রশ্ন উঠেছে, কেন কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়গুলি নিয়ে পদক্ষেপ করছে না। রাহুলবাবুর এ দিনের মন্তব্যের পরেও রাজনৈতিক মহল সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রশ্ন তুলছে, এ-ও কি ফাঁকা আওয়াজ। আর বিজেপির একাংশের বক্তব্য, অষ্টমবার ভোটে হারার পরে রাজনীতিতে ভেসে থাকার জন্যই এ ধরনের ‘গা-গরম’ মন্তব্য করছেন রাহুলবাবু। ফিরহাদের অবশ্য মন্তব্য, ‘‘পাগলে কি না বলে...।’’