Firecrackers Market

Crackers: ব্যবসা প্রায় লাটে, পরিবেশবান্ধব বাজি তৈরি শিখতে যাচ্ছেন এ রাজ্যের ব্যবসায়ীরা

এ বছর সব ধরনের বাজি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। পরিবেশবান্ধব বাজি তৈরি শিখে এসে ব্যবসা বাঁচানোর রাস্তা খুঁজছেন মরিয়া ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২১ ১২:১৭
Share:

পরিবেশবান্ধব বাজি বা গ্রিন ক্র্যাকার তৈরি শিখতে এ বার তামিলনাড়ুর যাচ্ছেন এ রাজ্যের আতশবাজি ব্যবসায়ীরা।

পরিবেশবান্ধব বাজি বা গ্রিন ক্র্যাকার তৈরি শিখতে এ বার তামিলনাড়ুর যাচ্ছেন এ রাজ্যের আতশবাজি ব্যবসায়ীরা। এ ধরনের বাজি কী ভাবে তৈরি করতে হয়, রাজ্যের অধিকাংশ উত্‌পাদকই তা জানেন না । হাতেকলমে শিখতে তাই তামিলনাড়ু যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
বছরের পর বছর বাজির দূষণ নিয়ে বিতর্ক, বিধিনিষেধ, টানাপড়েনের প্রভাব পড়ছে ব্যবসায়। এ বছর তো সব ধরনের বাজিকে নিষিদ্ধই ঘোষণা করে দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। পরিবেশবান্ধব বাজি তৈরি শিখে এসে এই অনিশ্চয়তার থেকে বার হয়ে আসার রাস্তা খুঁজছেন ব্যবসায়ীরা।

চলতি নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে তামিলনাড়ুতে হবে প্রশিক্ষণ। আতশবাজি উন্নয়ন সমিতি জানাচ্ছে, এই বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে যাবেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার চম্পাহাটির হারালের ১৭ জন ও বজবজের নুঙ্গি থেকে ১৪ জন ব্যবসায়ী। সমিতির চেয়ারম্যান বাবলা রায় বলেন, “কোল্ড ফায়ার এবং কী কী পদ্ধতিতে পরিবেশবান্ধব বাজি তৈরি করা যায়, সে সবের হাতেখড়ি হবে আমাদের। আতশবাজিতে এমন মশলা বা কেমিক্যাল ব্যবহার করা হবে, যা থেকে মানব শরীরে আগুন ধরবে না। বাজিতে আগুন দেওয়ার পর অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু এই নতুন পদ্ধতিতে তা হবে না। এই রকম বাজি অনেকটাই নিরাপদ।” তিনি আরও বলেন, “গ্রিন ক্র্যাকার বানাতে কোন মশলা কতটা পরিমাণ দিতে হবে, তা বোঝানো হবে প্রশিক্ষণ শিবিরে। যাতে কম ধোঁয়া বার হয়, সেই মতোই ফর্মুলা বার করা হয়েছে। গ্রিন ক্র্যাকারে বেরিয়ামের মাত্রা কম থাকায় দূষণও কম।”

Advertisement

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ

তামিলনাড়ুর কলেশ্বরী কলেজে সব মিলিয়ে ১২ দিনের প্রশিক্ষণ হবে । প্রশিক্ষণ শেষ হলে নাগপুরের ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট শংসাপত্র দেবে। এই লাইসেন্স পেলেই পরিবেশবান্ধব বাজি তৈরি করে প্যাকেটে তার লোগো ছাপানো যাবে।

পরিবেশকর্মী রোশনি আলির দায়ের করা এক মামলার ভিত্তিতে গত শুক্রবার কালীপুজো, দীপাবলি-সহ অন্যান্য উত্‌সবে সব ধরনের বাজি বিক্রি ও পোড়ানো নিষিদ্ধ করে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশে বলা হয়, আসন্ন উৎসবে কোনও বাজি ব্যবহার করা যাবে না। শুধুমাত্র প্রদীপ ও মোমবাতি জ্বেলেই দীপাবলি, ছট, কিংবা গুরু নানকের জন্মদিনের মতো উৎসব পালন করতে হবে। রায় দিতে গিয়ে হাই কোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য বলেন, “পরিবেশবান্ধব বাজির অনুমতি দিয়েছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, কিন্তু সেগুলো কী ভাবে পরীক্ষা করা হবে? সাধারণ আতশবাজিকে যে পরিবেশবান্ধব বাজি বা গ্রিন ক্র্যাকার্স বলে বিক্রি করা হবে না, তারই বা নিশ্চয়তা কোথায়। কে পরীক্ষা করবেন সেই বাজি, তার কোনও উত্তর দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে নেই।”

Advertisement

ব্যবসায়ীরা হাই কোর্টের নিষেধাজ্ঞায় কিছুটা ছাড় চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন। তার ফল যাই হোক না কেন, এই লাগাতার সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাইছেন ব্যবসায়ীরা। তার প্রেক্ষিতেই তড়িঘড়ি পরিবেশবান্ধব আতশবাজি তৈরি শিখতে উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা। আতশবাজি ব্যবসায়ীরা বলছেন, গ্রিন ক্র্যাকার তৈরি না শিখলে আগামী দিনে আতশবাজি ব্যবসা শেষ হয়ে যাবে। এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে কর্মসংস্থানে যুক্ত ৩১ লক্ষ মানুষের ভবিষ্যত্‌ চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement