উপ নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন।
আগামী কাল রাজ্যে প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা। তার আগে রাজ্যে দু’দিনের সফরে এসে পুলিশ-প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে কড়া বার্তা দিলেন উপ নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন। তিনি তাঁদের স্পষ্টতই বুঝিয়ে দিয়েছেন, ভোটের সময় গোলমাল বা রাজনৈতিক হিংসা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। হিংসা রুখতে তৈরি থাকতে হবে পুলিশকেই। দাগি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ করতে হবে প্রশাসনকে।
করোনা কালে বয়স্কদের জন্য পোস্টাল ব্যালটে ভোটের বিষয়টি চিন্তাভাবনা স্তরে রয়েছে। সে ক্ষেত্রে ৮০ বছরের বেশি বয়স্ক ভোটারদের বাড়িতে পোস্টাল ব্যালট পৌঁছে দেওয়া হতে পারে। তা ছাড়াও যাঁরা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে শারীরিক ভাবে অক্ষম, তাঁরাও এমন সুবিধা পাতে পারেন। কমিশনে আবেদন করে ফর্ম পূরণ করলে বাড়িতে পোস্টাল ব্যালট পৌঁছে যাবে। আবার ভোটকর্মীরাই সেই ব্যালট নিয়ে আসবেন। গোটা বিষয়টি ভিডিয়োগ্রাফি করা হবে।
বিধানসভা ভোটকে কেন্দ্র করে উত্তাপ বাড়ছে রাজ্য রাজনীতিতে। নীলবাড়ির লক্ষ্যে মাঠে-ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছে ডান-বাম দলগুলি। মধ্য কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেল গতকাল বৈঠক করেন কমিশন কর্তা সুদীপ জৈন। ওই বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের পুলিশ-প্রশাসনিক কর্তারা। আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্যের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দফতরের সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। ছিলেন স্বাস্থ্য, শিক্ষা দফতরের সচিবেরা। আমপান ঘূর্ণিঝড়ের পর ক্ষতিগ্রস্তদের কি অবস্থা? স্কুল বাড়িগুলি সারানো হয়েছে কি না? পরীক্ষার সময়সূচি-সহ নানা বিষয়ে জানতে চান সুদীপ।
আরও পড়ুন: শিশির অধিকারীর ‘অধীনস্থ’ সভাপতি তিনি, জেলার দায়িত্ব নিয়ে বললেন সৌমেন
আরও পড়ুন: ফেসবুকে বিক্ষুব্ধ সাংসদ শতাব্দী, শনিবারবেলায় তাকিয়ে তৃণমূল
বৈঠকে ছিলেন আয়কর, শুল্ক দফতরের অফিসারেরাও। ভোটের সময় কালো টাকার লেনদেন নিয়ে প্রতিবারই অভিযোগ ওঠে। এ বার আগে থেকে সে বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন কমিশন কর্তা। এমনটাই সূত্রের খবর।
রাজ্যে ফুলবেঞ্চ আসার আগে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যতালাশ করে দিল্লি ফিরে গিয়েছেন বিকেলে। তার আগে অবশ্য তিনি ত্রিপুরা ভবনে ঘুরে যান। মনে করা হচ্ছে, জানুয়ারির ১৮ থেকে ২২ তারিখের মধ্যে কমিশনের ফুল বেঞ্চ আসতে পারে।
এ বার ভোটে প্রতি বুথ কেন্দ্রে এক হাজারের বেশি ভোটারের প্রবেশে অনুমতি নাও মিলতে পারে। সে ক্ষেত্রে আরও ২৮ হাজার বুথের সংখ্যা বাড়তে পারে। খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হয়েছে আগেই। ভোটার তালিকা সংশোধন, নাম সংযোজন এবং বিয়োজনের কাজ হয়েছে গত ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের কার্যালয় সূত্রে খবর, রাজ্যে ৭৮ হাজার ৯০৩টি বুথ রয়েছে। মোট ভোটার ৭ কোটি ১৮ লক্ষ ৪৯ হাজার ৩০৮ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ৩ কোটি ৬৭ লক্ষ ২ হাজার ৫৯০। মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৩ কোটি ৫১ লক্ষ ৪৫ হাজার ২৮৮। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে ১ হাজার ৪৩০ জন। এই পরিসংখ্যানের কম বেশি হতে পারে চূড়ান্ত তালিকায়।