ফাইল চিত্র।
কাজের সুবাদে ভিন্ রাজ্য কিংবা ভিন্ দেশেই জীবন কাটান পরিযায়ী শ্রমিকেরা। আর তাই নাকি তাঁদের ‘গুরুত্ব’ কম বলে অভিযোগ। অতিমারির সময় এই অভিযোগের সত্যতা বোঝা গিয়েছে বলে বিভিন্ন মহলে আলোচনাও হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অভিবাসী বা পরিযায়ী শ্রমিকেরা যেন গণতান্ত্রিক অধিকার বজায় রাখতে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে পারেন, এই দাবিতে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিল বঙ্গ, অসম এবং ওড়িশার পাঁচটি সংগঠন। তা নিয়ে কমিশন থেকে সদুত্তর না এলে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনের নেতৃত্ব।
দেশ জুড়ে লকডাউন পর্বে বাড়ি ফিরতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন অনেক অভিবাসী শ্রমিক এবং তাঁদের পরিজনরা। এমনকি, কিছু মানুষের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। সে ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলির ভূমিকা প্রশ্নহীন হয়নি বলেও চর্চা চলেছে। অনেকের মতে, পরিযায়ী শ্রমিকেরা যদি নিয়মিত ভোট দেওয়ার সুযোগ পেতেন, তা হলে হয় তো তাঁদের নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি আরও কিছুটা সক্রিয় ভূমিকা দেখাত। কিন্তু কাজের জন্য বাড়ি থেকে দূরে থাকায় ভোট দেওয়া হয় না ওঁদের।
আর একদিনের জন্য বাড়ি ফিরে ভোট দেওয়া শুধু কষ্টকর নয়, ব্যয়বহুলও। তাই তাঁদের পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটাধিকার দেওয়া উচিত বলে কমিশনকে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করেছেন সিটিজেন ফর জাস্টিস অ্যান্ড পিস, লোকশক্তি অভিযান, অল ইন্ডিয়া ইউনিয়ন অব ফরেস্ট ওয়ার্কিং পিপল, বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ এবং ভারতীয় নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চের নেতৃত্ব।
ভোটের হার বাড়ানোর লক্ষে নানা পদক্ষেপ করে থাকে কমিশন। কোনও ভোটারই যাতে তাঁর অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন, তার চেষ্টা করে তারা। তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে ভোটারের নাগরিক অধিকার সুনিশ্চিত করার দায়িত্ব কমিশনের, তা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন তিস্তা শেতলওয়াড়, প্রফুল সামন্ত, সামিরুল ইসলাম, অনিল ধারকার-সহ সংগঠনের নেতারা। তাঁদের মতে, ‘‘শুধু শ্রমিকেরা নন, যাঁরা বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে ভোট দিতে পারেন না, তাঁদের সকলের জন্য ভাবা উচিত কমিশনের।’’
দিন ১৩ আগে পাঠানো চিঠির প্রত্যুত্তর এক মাসের মধ্যে না এলে আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা। কমিশনের পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় আইন ও ন্যায়মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদকেও চিঠি পাঠিয়েছে সংগঠনগুলি। কমিশনকে পাঠানো চিঠির ছত্রে ছত্রে নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকারের উল্লেখ রয়েছে। কয়েক দিন আগে ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে ভোটারদের পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানের সিদ্ধান্ত নিয়েও পিছিয়ে আসে কমিশন। এ ভাবে পোস্টাল ব্যালটের ব্যবহার বাড়লে অবাধ ভোটদান নিশ্চিত করা নিয়ে সংশয় থাকবে বলে মত প্রকাশ করেছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তবে করোনা সংক্রমিত বা সন্দেহভাজনেরা পোস্টাল ব্যালটের সুবিধা পাবেন। আর ৮০ বছর এবং তার ঊর্ধ্বে সব মানুষই পোস্টাল ব্যালটের ভোটাধিকার পেয়েছেন। যার সূচনা হয় নভেম্বর ও ডিসেম্বরে হওয়া ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা নির্বাচনে।