জয়ন্ত চক্রবর্তী
অভিযোগ, ভিক্ষা করানোর জন্য ছ’মাসের মেয়ের চোখে ওষুধ দিয়ে অন্ধ করে দেয় বাবা। সোনারপুরের সূর্য সেন কলোনির বাসিন্দা জয়ন্ত চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, সম্পত্তি দখল করার চেষ্টা এবং মা ও ভাইকে মারধরের অভিযোগে আগে গ্রেফতার হয় জয়ন্ত। মাস দুয়েক আগে জেল থেকে ছাড়া পায়। কিছু দিন আগে স্ত্রী ও মেয়েকে কলকাতার এক সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে সে। তারপর সোনারপুর থানায় গিয়ে অভিযোগ তার মা ও ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে জানায়, স্ত্রী-মেয়ের চোখে অ্যাসিড দিয়েছে তারা।
আরও পড়ুন: সিআইডি-র দাবি ওড়াল ফরেন্সিক
অভিযোগের সত্যতা নিয়ে প্রথম থেকেই তদন্তকারীদের মনে সন্দেহ দানা বেঁধেছিল। এক পুলিশ কর্তার কথায়, ওই সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, মাস ছয়েকের ওই শিশুর চোখে অ্যাসিড দেওয়া হয়নি। কিন্তু কোনও ওষুধের বিষক্রিয়ায় চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে শিশুটি।
তদন্তে জানা যায়, জয়ন্তের বয়ানে প্রচুর অসঙ্গতি রয়েছে। অগস্ট মাসের যে দিন তার মা ও ভাই অ্যাসিড ছুড়েছিল বলে দাবি করেছিল জয়ন্ত, প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় সে দিন সে বা তার স্ত্রী বাড়িতেই ছিল না। আরও তদন্তে জানা যায়, জয়ন্তের দু’টি বিয়ে রয়েছে। জিৎ ও জুয়েল নামে জয়ন্তের প্রথম পক্ষের দুই ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
তারাই জানায় যে, জয়ন্ত ওই শিশুর চোখে নিয়মিত একটি ওষুধ দিত। এ নিয়ে বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দিও দিয়েছে জিৎ ও জুয়েল।
তারপরই জয়ন্তকে থানায় ডাকা হয়। দীর্ঘ জেরার পরে গত শুক্রবার জয়ন্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেরায় জানা যায়, জয়ন্তের চারটি বিয়ে ও একাধিক সন্তান রয়েছে। নিজে কোনও উপার্জন করে না।
জেলা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, ধৃতকে জেরা করে কী ওষুধ দেওয়া হয়েছিল, তা-ও জানা গিয়েছে। তা ছাড়া, সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের রিপোর্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই ওষুধ নিয়মিত কোনও শিশুর চোখে দেওয়ায় কী ধরনের বিষক্রিয়া হতে পারে, সেই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতামতও নেওয়া হচ্ছে। ওই ওষুধ ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। জয়ন্ত স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।