কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি তে বাম মহিলা সংগঠনগুলির বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা। শিয়ালদহে। নিজস্ব চিত্র।
প্রতিবাদের সামনে পিছু হঠতে বাধ্য করতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে। শুধু কৃষকের স্বার্থ নয়, দেশের খাদ্য সুরক্ষার জন্যও এই প্রতিবাদ জরুরি। এই বার্তা দিয়েই আজ, মঙ্গলবারের ধর্মঘটে সমর্থনের জন্য সকলের কাছে আবেদন জানাল কৃষক সংগঠনগুলি। ধর্মঘটের আগের দিনও নানা প্রতিবাদ দেখা গেল কলকাতায়।
কৃষক ও ক্ষেতমজুর সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ কৃষক সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির রাজ্য শাখার তরফে অমল হালদার, কার্তিক পালেরা সোমবার বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘বাংলার কৃষক, ছাত্র, যুব ও মহিলা সংগঠন-সহ সর্ব স্তরের মানুষের কাছে আবেদন, এই বন্ধকে সর্বাত্মক করে তুলুন। মোদী সরকার চার বার বৈঠকের পরেও এখনও পর্যন্ত কৃষকদের দাবি— ‘তিনটি কৃষি বিল ও বিদ্যুৎ বিল বাতিল করো’ মেনে নিতে অস্বীকার করেছে। বিপরীতে তারা কৃষকদের অবমাননা ও অপমান করে চলেছে। কৃষকদের বাধা দিতে নানা হীন কায়দাও করে চলেছে’। কেন্দ্রের এই মনোভাবের বিরুদ্ধে আজ ১২ ঘণ্টার ধর্মঘটই জবাব হবে কৃষক নেতাদের আশা। সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য ও কৃষক সভার সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লাও আবেদন করেছেন, নানা ধরনের ‘অপপ্রচার’ চলছে, তাতে কান না দিয়ে সর্ব স্তরের মানুষ কৃষকদের পাশে দাঁড়ান।
শ্রমিক ও বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠনের নেতৃত্বও এ দিন বলেছেন, গত ২৬ নভেম্বর ধর্মঘট ডাকা হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি ও বিদ্যুৎ আইন-সহ ‘জন-বিরোধী নীতি’র প্রতিবাদে। কিন্তু কেন্দ্রের এখনও হুঁশ ফেরেনি! তাই আজ আরও বড় আকারে ধর্মঘট করে মোদী সরকারকে ধাক্কা দেওয়ার ডাক দিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। ধর্মঘট উপলক্ষে আজ এন্টালি থেকে মিছিলে বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রদের পাশাপাশি শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বও থাকবেন।
সরাসরি ধর্মঘটকে সমর্থন না করলেও এ বার ‘নৈতিক সমর্থনে’র কথা বলেছে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিনই মেদিনীপুরে বলেছেন আজকের (মঙ্গলবার) কৃষক আন্দোলনকে তিনি সমর্থন করছেন। তার প্রেক্ষিতে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের মন্তব্য, ‘‘ঠেলার নাম বাবাজি! পুলিশ দিয়ে রাজ্য সরকার ধর্মঘট ভাঙতো। আগের ধর্মঘটের বিষয়গুলিকে মুখ্যমন্ত্রী সমর্থন করেছিলেন, এ বার এল নৈতিক সমর্থন। এটা ভাল লক্ষণ!’’ কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরাও আজ মিছিল করবেন নানা জায়গায়। বামপন্থী বিভিন্ন মহিলা সংগঠনের ডাকে এ দিনই শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে বিক্ষোভ-সভা ছিল কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে। সভা শেষে মশাল মিছিল করে পোড়ানো হয় প্রধানমন্ত্রীর কুশপুতুল।