RG Kar Medical College and Hospital Incident

বিচারের দাবিতে পথে এ বার শ্রমিক-কৃষকও

দ্রুত ন্যায়-বিচারের দাবিতে এবং রাজ্যের স্বাস্থ্য-‘দুর্নীতির’ প্রতিবাদে এ দিন কলকাতায় মিছিল করেছে সিপিএমের শ্রমিক, কৃষক এবং খেতমজুর সংগঠন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৪
Share:

আর জি কর কাণ্ড নিয়ে সিপিএমের কৃষক, শ্রমিক ও খেতমজুর সংগঠনের ডাকে মিছিল। কলকাতায়। —নিজস্ব চিত্র।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনার সাপেক্ষে ধর্না-অবস্থান তুলে নিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। এই পরিস্থিতিতে আর জি কর-কাণ্ডকে সামনে রেখে রাজনৈতিক আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াতে চাইছে বিরোধী দলগুলি। উৎসবের মরসুম শুরুর আগে হাতে যতটা সময় আছে, সেটাই কাজে লাগাতে চাইছে তারা, যা শুরু হয়ে গেল শনিবারই।

Advertisement

দ্রুত ন্যায়-বিচারের দাবিতে এবং রাজ্যের স্বাস্থ্য-‘দুর্নীতির’ প্রতিবাদে এ দিন কলকাতায় মিছিল করেছে সিপিএমের শ্রমিক, কৃষক এবং খেতমজুর সংগঠন। এখনও পর্যন্ত আর জি করের ঘটনার প্রেক্ষিতে ছাত্র, যুব ও মহিলারা ধারাবাহিক ভাবে সম্মিলিত আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়েছেন। কিন্তু এই বিষয়ে শ্রেণিগত সংগঠনের পথে নামা এটাই প্রথম। এর পাশাপাশি কংগ্রেস সূত্রের খবর, একই বিষয়ে আগামী সপ্তাহের গোড়ায় কলকাতায় তিন দিনের অবস্থান-কর্মসূচি নেওয়া হবে। নির্দিষ্ট সময় বেঁধে ধর্না চলবে। সেখানে উপস্থিত থাকতে পারেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও। এরই সঙ্গে, কৃষক সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ সংযুক্ত কিসান মোর্চাও আগামী সপ্তাহে রাজ্য জুড়ে তাদের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। প্রসঙ্গত, সিপিএমের যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই ২৬ সেপ্টেম্বর কলকাতায় গণ-জমায়েত হবে বলে ডাক দিয়ে রেখেছেন।

সিটু, কৃষকসভা ও খেতমজুর ইউনিয়নের রাজ্য শাখার ডাকে এ দিন কলেজ স্ট্রিট থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত মিছিল হয়। সেখান থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে। কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন সিটুর অনাদি সাহু, কৃষকসভার তুষার ঘোষ, অমিয় পাত্র, খেতমজুর সংগঠনের নেতা নিরাপদ সর্দার, এস এম সাদি প্রমুখ। ‘শ্রমিক-কৃষক দিচ্ছে ডাক, তিলোত্তমা বিচার পাক’, এমন স্লোগানকে সামনে রেখে বিচারের দাবিতে চলমান আন্দোলন শহরাঞ্চলের পাশপাশি রাজ্য জুড়ে গ্রামে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন নেতৃত্ব। এই সূত্রেই সিটুর রাজ্য সম্পাদক অনাদি বলেছেন, “হত্যাকাণ্ড ও তথ্যপ্রমাণ লোপাটে যুক্ত লোকজনের দ্রুত শাস্তি এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে গ্রাম-বাংলার কৃষক, কারখানার শ্রমিক আজ রাস্তায় নেমেছেন।”

Advertisement

এরই সঙ্গে, সংযুক্ত কিসান মোর্চার পশ্চিমবঙ্গ শাখার তরফে অমল হালদার, কার্তিক পালেরা জানিয়েছেন, আর জি কর-কাণ্ডকে ঘিরে তৈরি হওয়া এই আন্দোলনে কৃষক-জনতাকে আরও বেশি করে শামিল করার লক্ষ্যে আগামী ২৩ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর রাজ্যের গ্রামীণ জেলায় ব্লকে ব্লকে প্রতিবাদ সপ্তাহের ডাক দেওয়া হয়েছে। তারই অঙ্গ হিসেবে গ্রামের জনতাকে সঙ্গে নিয়ে পথসভা, হাটসভা, মিছিল করার কথা বলেছে মোর্চা। সেই সঙ্গে, বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগদানকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশি পদক্ষেপেরও তীব্র বিরোধিতা করেছে মোর্চা।

স্বাস্থ্য ‘দুর্নীতিকে’ সামনে রেখে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ও রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও। তাঁর অভিযোগ, “লাশ, ওষুধ, বর্জ্য, সবই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। সরকারি মদত ছাড়া এত বড় দুর্নীতি সম্ভব? বাংলার মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্রয় দিয়েছেন। কারণ তিনি দেখেন, আমার ভোটে জেতা নিয়ে কথা। শুধু আমার ভাগে যেন কম না পড়ে, বাকি তোমরা ভোগে যাও।”

বিরোধীদের আন্দোলন কর্মসূচিকে অবশ্য আমল দিচ্ছে না শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের যাদবপুরের সাংসদ সায়নী ঘোষ দক্ষিণ ২৪ পরগনার সরবেড়িয়ায় একটি পথসভায় বলেছেন, “খারাপ সময় আসে। তবে তা কেটেও যায়। এই পরিস্থিতির সুযোগে বিরোধীরা ক্ষীর খেতে চাইছে। দু’দিন মিছিল করে কোনও লাভ হবে না। আমরাই বছরভর মানুষের পাশে থাকি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement