গ্রহীতারা চিহ্নিত হতেই প্রতিস্থাপনের জন্য অঙ্গ আহরণ (রিট্রিভাল) এবং সংরক্ষণ (হার্ভেস্টিং) শুরু হয়। ফাইল চিত্র
অসুস্থকে সুস্থ করাই যার পেশা ছিল, মৃত্যুর পরও তাঁর সেই ধারা অব্যাহত রইল। মৃত্যুর পর তিন জনকে নবজীবন দিতে চলেছেন চিকিৎসক সংযুক্তা শ্যাম রায়। অ্যানাস্থেশিয়া বিশেষজ্ঞ সংযুক্তার বয়স ৪২-এর কাছাকাছি। ফুলবাগানের এক বেসরকারি হাসপাতালে সংযুক্তার ব্রেন ডেথ ঘোষণার পর লিভার, কিডনি এবং চোখ দানের সিদ্ধান্ত নেন তাঁর পরিবার। মঙ্গলবার অঙ্গদান-এর সিদ্ধান্ত পাকা হওয়ার পরই অঙ্গগ্রহীতাদের খোঁজ শুরু হয়। গ্রহীতারা চিহ্নিত হতেই প্রতিস্থাপনের জন্য অঙ্গ আহরণ (রিট্রিভাল) এবং সংরক্ষণ (হার্ভেস্টিং) শুরু হয়।
যে হাসপাতালে সংযুক্তার ব্রেন ডেথ হয়েছে সেই বেসরকারি হাসপাতালেই লিভার প্রতিস্থাপন করা হবে। কলকাতার এক ৬১ বছরের প্রৌঢ়ের দেহ লিভার প্রতিস্থাপন করা হবে। একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হবে এসএসকেএমের এক রোগীর শরীরে। অপর কিডনি প্রতিস্থাপন করা হবে দমদম নাগেরবাজারের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বছর ৫০-এর এক মহিলার শরীরে। এক বেসরকারি হাসপাতালে দান করা হয়েছে সংযু্ক্তার চোখ।
শনিবার হৃদরোগে আক্রান্ত হন সংযুক্তা। জরুরি চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে, সেখান থেকে নিয়ে আসা হয় ফুলবাগানের বেসরকারি হাসপাতালে। এই হাসপাতালে তাঁর ব্রেন ডেথ ঘোষণা করা হয়। তারপরই সংযুক্তার পরিবার অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেয়। ফুলবাগানের এই বেসরকারি হাসপাতালে একসময় কর্মরত ছিলেন সংযুক্তা। এই হাসপাতালের চিকিৎসক শ্যামাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সংযুক্তা আমার জুনিয়র ছিল কিন্তু একই হাসপাতালে যুক্ত থাকার সুবাদে কাজের প্রতি ওঁর মনোযোগ লক্ষ করেছি। আজ খুব খারাপ লাগছে ওঁর সন্তান ও পরিবারের কথা ভেবে। তবে সংযুক্তার পরিবার অত্যন্ত সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এক চিকিৎসকের অঙ্গদান করে। সংযুক্তাকে সম্মান জানানোর এর থেকে ভাল উপায় নেই।”