কালনা থেকেই যেত চোলাই, দাবি পরিবারের

কালনা খেয়াঘাট পেরোলেই নৃসিংহপুর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামের বাসিন্দা চন্দন ওরফে গুলবা মাহাতর চোলাই বিক্রির কারবার রয়েছে। বাড়ি এবং আশেপাশের বাগানে চোলাইয়ের প্যাকেট লুকিয়ে রাখতেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৪৭
Share:

অভিযোগ, এ ভাবেই চলে চোলাইয়ের কারবার। কুনুর নদীর ধারে, বসতপুরে। নিজস্ব চিত্র

ভোরে ভাগীরথী পেরিয়ে কালনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল নদিয়ার শান্তিপুরের হরিপুর পঞ্চায়েত এলাকার চৌধুরীপাড়ার তিন জনকে। বেলা বাড়তে মারা যান তিন জনেই। মৃত সুনীল মাহাত (৩০), ভুটান মাহাত (৩৪) এবং কাশীনাথ মাহাতদের (৬৫) পরিবারের দাবি, গ্রামের ঠেক থেকে চোলাই খাওয়ার পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁরা। ওই ঠেকে কালনার হাঁসপুকুর থেকে মদ নিয়ে যাওয়া হত বলেও তাঁদের দাবি। যদিও জেলা পুলিশ ও আবগারি দফতরের দাবি, বুধবার হাঁসপুকুরে অভিযান চালিয়ে কোনও ভাটি বা বিক্রেতার সন্ধান মেলেনি। এর আগেও হাঁসপুকুর নিয়ে কখনও চোলাইয়ের কারবারের অভিযোগ ওঠেনি বলেও পুলিশের দাবি। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন, ‘‘ময়না-তদন্তের পরেই বলা সম্ভব কী ভাবে মৃত্যু হয়েছে।’’

Advertisement

কালনা খেয়াঘাট পেরোলেই নৃসিংহপুর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামের বাসিন্দা চন্দন ওরফে গুলবা মাহাতর চোলাই বিক্রির কারবার রয়েছে। বাড়ি এবং আশেপাশের বাগানে চোলাইয়ের প্যাকেট লুকিয়ে রাখতেন তিনি। এলাকার খেতমজুর, ইটভাটা শ্রমিকদের অনেকেই নিয়মিত সেই ঠেকে যেতেন। মঙ্গলবার বিকেলেও এলাকার অনেকেই সেখান থেকে মদ খান। সন্ধ্যা থেকেই পেট ব্যথা, বমি শুরু হয়ে যায় তাঁদের। মাঝ রাত থেকে ভোরের মধ্যে অসুস্থ চার জনকে কালনায় আনা হয়। তাঁদের মধ্যে দুলাচাঁদ মাহাত নামে বছর পঁয়ত্রিশের এক যুবক রাস্তাতেই মারা যান। বাকি তিন জনের মৃত্যু হয় হাসপাতালে। মৃত ভুটানের ভাই জেঠু মাহাত বলেন, ‘‘চন্দনের বাড়িতে গিয়ে প্রতিদিনই অনেকে মদ খায়। মঙ্গলবার দাদাও গিয়েছিল। আমাদের ধারণা মদে বিষক্রিয়া থেকেই দাদা ও এলাকার কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে।’’

তাঁর আরও দাবি, ‘‘চন্দনকে মদ পৌঁছে দিত কালনার কয়েকজন। হাঁসপুকুর গ্রাম থেকে মদ যেত বলে শুনেছি।’’ মৃতদের এক পড়শি লালজি মাহাত জানান, এলাকার বেশির ভাগ মানুষ অশিক্ষিত। তাঁরা কেউ মাটি কাটা, কেউ খেতমজুরের কাজ করেন। কাজের শেষে মদ তাঁদের নেশা। কিন্তু এতে যে শরীরের ক্ষতি হয় তা নিয়ে এলাকায় কোনও প্রচার নেই বলেও তাঁর দাবি।

Advertisement

শুক্রবার কালনার অঘোরনাথ পার্ক স্টেডিয়ামে সভা করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তার আগে কালনায় চোলাইয়ের কারবারের অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তিতে প্রশাসন। এ দিন জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশে হাঁসপুকুরে তল্লাশিও চালান কালনার এসডিপিও শান্তনু চৌধুরী। পুলিশের দাবি, এ দিন তল্লাশিতে কিছু মেলেনি। কালনায় ভিন্‌ জেলায় সরবরাহ করার মতো বড় মাপের চোলাইয়ের কারবারের জায়গা নেই বলেও দাবি করেছেন জেলা পুলিশের এক কর্তা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement