কোনা এক্সপ্রেসওয়ে। ফাইল চিত্র।
নাম এক্সপ্রেসওয়ে, কিন্তু তার ভয়াবহ যানজট কলকাতামুখী যাত্রীদের প্রাত্যহিক শিরঃপীড়ার কারণ হয়ে উঠেছে। দীর্ঘ মেয়াদে সেই কোনা এক্সপ্রেসওয়ের যান-যন্ত্রণা কমানোর পরিকল্পনা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু সেই যানজট-সমস্যার আশু একটা সুরাহা না-হলেই যে নয়, সেটা মর্মে মর্মে অনুভব করছে রাজ্য সরকার। চালু পরিকাঠামো অক্ষুণ্ণ রেখে কী ভাবে যানজট কমানো যায়, তা খতিয়ে দেখতে খড়্গপুর আইআইটি-র বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিচ্ছে তারা।
কয়েক বছর ধরে দুই ও ছয় নম্বর জাতীয় সড়কে গাড়ির ভিড় বাড়তে শুরু করায় কোনা এক্সপ্রেসের যানজট প্রায় নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। অভিযোগ, মাঝেমধ্যে সন্ধ্যার পরে ওই যানজট এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে যে, তার রেশ প্রায়ই পশ্চিমে ডানকুনি টোল প্লাজ়া এবং দক্ষিণে ধুলাগড় টোল প্লাজ়া পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হচ্ছে কলকাতামুখী বাস, ছোট গাড়ি এবং অন্যান্য যানের যাত্রীদের। সমস্যার মোকাবিলায় ছ’টি লেনের এলিভেটেড করিডর তৈরির পরিকল্পনা করেছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দু’হাজার কোটি টাকার ওই প্রকল্প রূপায়ণে কয়েক বছর সময় লাগবে। তার আগে কিছু একটা ব্যবস্থা যে না-করলেই নয়, সেটা বুঝেই সরকার দায়িত্ব দিচ্ছে আইআইটি-র বিশেষজ্ঞদের।
কোনা এক্সপ্রেসওয়ে সাধারণ ভাবে ছয় লেনের হলেও সাঁতরাগাছি রেলসেতুর কাছে ওই রাস্তার প্রস্থ এত কমে গিয়েছে যে, সেটি ওখানে কার্যত হয়ে দাঁড়িয়েছে দু’লেনের। যানজটের মূল কারণ সেটাই। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, পরিস্থিতি সামাল দিতে খড়্গপুর আইআইটি-র বিশেষজ্ঞ ভার্গব মৈত্রের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ওই রাস্তায় যানবাহনের গতিপ্রকৃতি বুঝতে একযোগে ডানকুনি, ধুলাগড় ও দ্বিতীয় হুগলি সেতুর টোল প্লাজ়ায় টানা ৭২ ঘণ্টা ধরে তথ্য সংগ্রহ করেছেন খড়্গপুর আইআইটি-র বিশেষজ্ঞেরা।
ভার্গব জানান, সাময়িক সমস্যা নিরসনে তাঁরা ডানকুনি ও ধুলাগড়ের আশেপাশে বেশ কিছু ‘স্যাটেলাইট পার্কিং’ তৈরির কথা ভাবছেন। সেখানে পণ্যবাহী যানবাহনের একাংশকে সাময়িক ভাবে দাঁড় করিয়ে রাখা হবে। তবে তার সবটাই করা হবে ওই সব গাড়িতে কী ধরনের পণ্য বা কতটা পচনশীল পণ্য পরিবহণ করা হচ্ছে, তার ভিত্তিতে। ট্রাকে বহন করা পণ্যের গুরুত্ব অনুযায়ী ওই সব গাড়িকে ছাড়ার জন্য ফাঁকা বা খালি সময়ের অপেক্ষায় রাখা হবে। কোন গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকবে আর কোন গাড়ি ছাড়া হবে, তার সবটাই নির্ধারিত হবে বৈদ্যুতিন উপায়ে। এর ফলে সাঁতরাগাছির রেল উড়ালপুলে এক বারে অনেক গাড়ি চলে আসার প্রবণতা কমবে। তাতে অহেতুক যানজট এবং দীর্ঘ প্রতীক্ষার যন্ত্রণার উপশম করা যাবে বলে মনে করছেন তিনি। ঠিক হয়েছে, এই ব্যাপারে হাওড়া জেলা পুলিশ, হাওড়া কমিশনারেট, চন্দননগর কমিশনারেট, কলকাতা পুলিশ এবং রাজ্য পুলিশ যোগাযোগ ও সমন্বয় রেখে চলবে।