তুষারধসে নিখোঁজদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন সেনা এবং আধাসেনা জওয়ানেরা। মঙ্গলবার সিকিমে। রয়টার্স । শুভদীপ মুখোপাধ্যায় (ইনসেটে)।
গ্যাংটক থেকে ১৫ মাইল গিয়েছিলাম আমরাও। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার আগে-পিছে হবে। ১৫ মাইলে একটা জমে বরফ হয়ে থাকা ঝর্নার কাছে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছিল। গাড়িগুলো সব ঝর্নার আশেপাশে দাঁড় করানো ছিল। লক্ষ্য করলাম, পর্যটকদের অনেকেই রাস্তা থেকে বাঁ দিকে পাহাড়ের চড়াইয়ে জমে থাকা বরফের উপরে নাচানাচি এবং নিজস্বী তুলতে শুরু করেছেন।
আমি শিলিগুড়ির বাসিন্দা। কর্মসূত্রে থাকি কলকাতায়। সোমবার স্ত্রী দেবশ্রী এবং ছেলে স্বর্ণিমকে নিয়ে পাহাড়ে উঠেছি। স্ত্রী, ছেলেকে নিয়ে দূরেই ছিলাম। জানতাম, বরফের তলা দিয়ে জল বইতে শুরু করলে তার আশেপাশে যেতে নেই। তাই বেশ নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে প্রাকৃতিক শোভা দেখছিলাম। আচমকা প্রচণ্ড শব্দে ধস নামল। রাস্তা, দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ি, কালভার্ট পার করে ডান পাশে খাদের দিকে খানিকটা ধস নেমে গেল।
ঘটনার আকস্মিকতায় প্রাথমিক ভাবে সবাই থমকে গিয়েছিল। পরে দেখা গেল, যাঁরা নাচানাচি করছিলেন, তাঁদের অনেকেই ধসে আটকে পড়েছেন। কারও উপরে তখন অনেকটাই বরফের স্তর। সঙ্গে সঙ্গে দৌড়োদৌড়ি শুরু হল। চিৎকার, আর্তনাদ মিলিয়ে সুন্দর প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশ যেন এক লহমায় বদলে গেল! কী করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না! কিছু ক্ষণের মধ্যেই উদ্ধারকারী দল চলে এল। পুরো এলাকায় যানজট তখন বাড়তে শুরু করেছে। পুলিশ এল। এলাকা ঘিরে দিয়ে যাঁরা চোট পাননি, তাঁদের এলাকা ছেড়ে চলে যেতে অনুরোধ করল। তখন একটি গাড়িতে গ্যাংটক ফিরে এলাম। পরে, সমাজ মাধ্যমে দেখলাম, কয়েক জন মারা গিয়েছেন। আহত অনেকে।
(প্রত্যক্ষদর্শী বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত)