ছবি: সংগৃহীত।
১৪ মাস আগে আবগারি বিধি বদলে অনলাইন আবেদনের মাধ্যমে বিলিতি মদের দোকান (অফ শপ) খোলার লাইসেন্স দেওয়া শুরু করেছিল রাজ্য। লক্ষ্য ছিল, মদ বিক্রি করে অন্তত আরও পাঁচ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব বাড়ানো। নির্বিচারে মদের দোকান খোলার অভিযোগ তুলে তা নিয়ে হইচই শুরু করে বিরোধী দলগুলি। শুক্রবার আবগারি বিধি ফের বদলে প্রায় এক হাজার বিলিতি মদের দোকানের লাইসেন্স বাতিল করেছে আবগারি দফতর। ঠিক হয়েছে, লাইসেন্সপ্রাপ্তদের আবেদনের সঙ্গে জমা দেওয়া টাকা ফেরত দিয়ে দেবে সরকার।
আবগারি দফতর সূত্রে খবর, প্রতিটি দোকান পিছু লাইসেন্সপ্রাপকেরা অন্তত ২৫-৩০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। গড়ে এক একটি দোকানে ৪-৫ জন করে কাজ করতেন। সরকারি নিয়মে দোকান খোলার পর, সরকারই তা বদলে ফেলায় এখন বিড়ম্বনায় পড়েছেন লাইসেন্সপ্রাপকেরা। তবে বার বার চেষ্টা করেও আবগারি কমিশনার খালিদ আনোয়ারের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তিনি ফোন ধরেননি। মেসেজেরও জবাব দেননি।
নবান্নের খবর, এখন রাজ্যে পাঁচ হাজার মদের দোকান আছে। আড়াই হাজার বিলিতি ও দিশি মদের অফ শপের পাশাপাশি দু’হাজার বার লাইসেন্স রয়েছে। বাকি ৫০০টি ক্লাব বা হোটেলে মদ পাওয়া যায়। এ বছর রাজ্যের মদ বিক্রি থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা তোলার লক্ষ্য নিয়েছে রাজ্য। সেই কারণে ২০১৮ সালে সরকার আরও ১ হাজার নতুন মদের দোকান খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
আরও পড়ুন: পুরুলিয়ায় কি বরফ পড়ছে নাকি! শোরগোল দিনভর
সাধারণ আবগারি বিধিতে নতুন মদের দোকান খোলার জন্য লটারির বিধান রয়েছে। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে রাজ্যের তাতে আপত্তি ছিল। সে সময় বিধি বদলে ফোর-কিউ ধারা যুক্ত করা হয়। সেই ধারায় তাড়ি ও পচাই ছাড়া একই ছাতার তলায় সব ধরনের মদ বিক্রির দোকান খোলার ব্যাপারটি ঢোকানো হয়। বলা হয়, অনলাইনে আবেদন করলে আবগারি কর্তারা তা যাচাই করে সেখানে দোকান খোলার লাইসেন্স দেবেন। প্রায় দেড় হাজার আবেদন জমা পড়ে। বাছাই করে প্রায় হাজার লাইসেন্স দেওয়ার জন্য অনুমোদিত হয়। গড়ে ৫০ হাজার টাকা ফি দিয়ে আবেদন করতে হয়েছিল। লাইসেন্স পেয়ে ৭৪৩টি দোকান চালু হয়ে গিয়েছিল।
কর্তারা জানাচ্ছেন, দোকানগুলি খোলা শুরু হলেই বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ শুরু হয়। লোকসভা ভোটের আগে জানুয়ারিতে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ক্ষোভ জানান বেশ কয়েক জন মন্ত্রীও। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাময়িক ভাবে দোকানগুলি বন্ধ রাখতে বলেছিলেন। ২৭ ডিসেম্বরের বিধি ফের বদলে হাজার লাইসেন্স পাকাপাকিভাবে বাতিল করে দিয়েছে নবান্ন।