—ফাইল চিত্র।
রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারকে সতর্ক করলেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠি। নাম না করেও রাজধর্ম পালনের পরামর্শ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। রাজনৈতিক রং দূরে সরিয়ে রেখে রাজ্যে শান্তি বজায় রাখাই রাজ্য সরকারের প্রাথমিক কর্তব্য হওয়া উচিত, মন্তব্য রাজ্যপালের। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর রাজ্যে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে যে তীব্র সঙ্ঘাত, তা নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসনের ভূমিকা সন্তোষজনক নয় বলে যে অভিযোগ উঠছে, রাজ্যপালের ইঙ্গিত যে সে দিকেই, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলের সন্দেহ নেই।
কলকাতার আলিপুরে বৃহস্পতিবার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠি। সেখানে সংবাদমাধ্যমের এক প্রশ্নের জবাবে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘রাজনীতিকে দূরে সরিয়ে রেখে প্রতিটি রাজ্য সরকারের উচিত নিজের নিজের রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা এবং শান্তি বজায় রাখা।’’
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পরে রাজ্য বিজেপির সদর দফতরের সামনে তৃণমূলের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ। শুধু তাই নয়, রাজ্যের বিভিন্ন অংশে বিজেপির উপর আক্রমণের অভিযোগও উঠেছে। এই উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের ভূমিকা মোটেই সন্তোষজনক নয় বলে বিজেপির অভিযোগ। রাজ্যপাল বৃহস্পতিবার যে মন্তব্য করলেন, তাতে প্রকারান্তরে বিজেপির তোলা অভিযোগেই সিলমোহর পড়েছে। রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এবং শান্তি বজায় রাখা যে সরকারের কর্তব্য, তা তিনি রাজ্য সরকারকে এ দিন মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন।
আরও পড়ুন: তৃণমূলের হামলায় ফায়দাই দেখছে বিজেপি
তৃণমূলের তরফে রাজ্যপালের এই মন্তব্যের বিরোধিতা করা হয়েছে। এই ধরনের মন্তব্যের পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য দেখতে পাচ্ছেন কোনও কোনও তৃণমূল নেতা। দলের মহাসচিব তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘রাজ্যপালের এই মন্তব্য আমরা মানছি না।’’
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর রাজ্যে যে পরিস্থিতি, সে বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে সরকার এবং বিরোধী, দু’পক্ষই রাজ্যপালের কাছে গিয়েছিল। শাসকের তরফে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীরা বুধবার রাজ্যপালের কাছে যান এবং বিজেপি তথা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে আসেন। এর পর বিজেপির প্রতিনিধি দল রাজ্যপালের কাছে গিয়ে তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত হওয়ার এবং পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ জানায়। বামেরাও রাজ্যপালের দ্বারস্থ হন, তাঁদের সুরও মূলত তৃণমূল বিরোধীই ছিল। রাজ্যপাল গত কাল সব পক্ষের বক্তব্য শুনেছিলেন। আজ তিনি মুখ খুললেন এবং বুঝিয়ে দিলেন, রাজ্য সরকারের ভূমিকাকে তিনি সন্তোষজনক বলে মনে করছেন না।