—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বেআইনি অর্থলগ্নি মামলায় তাঁর থাকার কথা ছিল জেলে। ইতিমধ্যেই দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজা খাটছেন তিনি। সম্প্রতি এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে জেরায় উঠে আসে পিনকন-এর কর্ণধার সেই মনোরঞ্জন রায়ের নাম। তাঁকে নতুন করে জেরা করতে চেয়ে খোঁজ শুরু করে ইডি। কিন্তু, খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, গত তিন বছর চার মাস ধরে মনোরঞ্জন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন!
এতদিন কেন ভর্তি? ইডি সূত্রের খবর, হাসপাতালে গিয়ে তারা খোঁজখবর করতেই তড়িঘড়ি তাঁকে জেলে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তার পরে আবার তিনি জেল হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যান।
শুক্রবার জেল থেকে ভার্চুয়াল শুনানি করে মনোরঞ্জনকে ১০ দিন ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচার ভবনের সিবিআই (পিএমএলএ) বিশেষ আদালতের বিচারক। আদালত সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের আর্থিক অপরাধ দমন শাখার মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ছিলেন মনোরঞ্জন। ইডিও ওই মামলার তদন্ত শুরু করেছিল।
মনোরঞ্জনের আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায় শুক্রবার বলেন, ‘‘কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে মনোরঞ্জন-সহ আট জনের ২০২১ সালের শেষে যাবজ্জীবন সাজা মকুব হয়েছে। তবে ভিন্ রাজ্যের মামলায় তিনি এখন জেল হেফাজতে রয়েছেন। হয়তো আদালতের নির্দেশে চিকিৎসার কারণে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।’’
ইডির দাবি, মাসখানেক আগে পিনকনের মামলাতেই ব্যবসায়ী ও টেলিভিশন চ্যানেলের কর্তা কৌস্তুভ রায়কে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁকে জেরা করে পাওয়া নতুন কিছু তথ্যের ভিত্তিতে মনোরঞ্জনকে হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার ওই বেসরকারি হাসপাতালে গিয়েমনোরঞ্জনকে প্রাথমিক জেরাকরা হয়। ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে তলব করা হয় মনোরঞ্জনের মেডিক্যাল রিপোর্ট।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বিকেলে মনোরঞ্জনকে ওই বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। এবং মনোরঞ্জন বিকেলে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে ফিরে আসেন। শুক্রবার সকালে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের তরফে আদালতে জানানো হয়, মনোরঞ্জন অসুস্থ। তাঁর শ্বাসকষ্ট রয়েছে। জেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিচারক মনোরঞ্জনকে জেল থেকে ভার্চুয়ালি আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেন।’’ বিচারক শুভেন্দু সাহার প্রশ্নের উত্তরে মনোরঞ্জন জানান, তাঁর ডায়াবিটিস রয়েছে। বিচারক মনোরঞ্জনকে বলেন, ‘‘এখন অধিকাংশ মানুষের ডায়াবিটিস রয়েছে।’’ অরিজিৎ বলেন, ‘‘পিনকন বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা মারফত বহু প্রভাবশালী লাভবান হয়েছে বলে নানা তথ্য হাতে এসেছে। সেই কারণেই মনোরঞ্জনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে।’’
এ দিন কৌস্তুভকেও আদালতে নিজের জামিনের জন্য সওয়াল করেন। বিচারক কৌস্তুভকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এ দিনই কৌস্তুভ-ঘনিষ্ঠ প্রীতিময় চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তিকে হাই কোর্ট চত্বর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রের খবর।