প্রতীকী ছবি।
শিয়ালদহ থেকে বিভিন্ন জিনিস নিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের দিকে যাচ্ছিল মালগাড়িটি। কর্ড লাইনে জামালপুরের জৌগ্রাম স্টেশনের আগে বগি ফেলে ছুটল ইঞ্জিন। প্রায় আট কিলোমিটার দূরে নবগ্রাম স্টেশনের আগে ঘটনাটি বুঝতে পেরে ইঞ্জিনটি দাঁড় করান চালক। ফলে, বর্ধমানমুখী ‘আপ লাইনে’ প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে বন্ধ ছিল ট্রেন চলাচল।
এ দিকে, ক্রশিংয়ের উপর মালগাড়ির বগি দাঁড়িয়ে থাকায় রেল গেট বন্ধ রাখা হয়। তাতে মেমারি ও জামালপুর রুটের একাধিক বাস, ট্রেকার, মালবাহী গাড়ি আটকে পড়ে। রাস্তার দু’দিকেই গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যায়। কালঘাম ছুটে যায় সাধারণ যাত্রী থেকে নিত্যযাত্রীদের। রেল গেট ওঠার পরেও দীর্ঘক্ষণ যানজট ছিল। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্বে নিয়ে আসে।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, “ভোর ৫টা ৫০ মিনিট নাগাদ জৌগ্রাম স্টেশন ঢোকার আগে, লুপ লাইনে ঘটনাটি ঘটে। কাপলিং ব্রেক হওয়ার ফলে ইঞ্জিনের থেকে বগি আলাদা হয়ে গিয়েছিল। মালগাড়িতে বিভিন্ন বাক্স যাচ্ছিল। ৯টা ১০ নাগাদ ওই লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।’’
রেল সূত্রে জানা যায়, বর্ধমানমুখী তিনটে ট্রেনকে তৃতীয় লাইন বা ‘রিভার্স লাইন’ দিয়ে পাঠানো হয়। ওই লাইনে কোনও প্ল্যাটফর্ম ছিল না বলে ট্রেনগুলিকে জৌগ্রাম ও নবগ্রাম স্টেশনে চার, পাঁচ মিনিট করে দাঁড় করানো হয়। যাতে যাত্রীদের ওঠানামায় কোনও অসুবিধা না হয়। বর্ধমানমুখী ট্রেন ওই দু’টি স্টেশনে ঢোকার সময় হাওড়ামুখী ট্রেনকে আগের স্টেশনে দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছিল। ট্রেন যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, ‘রিভার্স লাইনে’ বর্ধমানমুখী ট্রেন দাঁড়ালেও প্ল্যাটফর্ম না থাকায় বয়স্ক মানুষেরা গন্তব্যস্থলে যাওয়ার জন্য ট্রেনে উঠতে পারেননি। তাঁদের দীর্ঘক্ষণ স্টেশনেই অপেক্ষা করতে হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, আপ লাইন দিয়ে মালগাড়ি যাচ্ছে, স্টেশন কর্তৃপক্ষের এই ঘোষণার কিছুক্ষণ পরেই দেখা যায়, মালগাড়ির ইঞ্জিন ছুটছে। আর তার পিছনে ধীর গতিতে আসছে বগিগুলি। ইঞ্জিন ও বগি ততক্ষণে আলাদা হয়ে গিয়েছে। ইঞ্জিন ছুটে চলে গেলেও বগিগুলি আপ লাইনের ক্রসিংয়ের মুখে দাঁড়িয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শী রামকৃষ্ণ গুপ্ত বলেন, “ভোর ৫টার সময় প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়েছিলাম। স্টেশনে এসে দেখি, একটি ইঞ্জিন ছুটে আসছে। তার পিছনে রয়েছে মালগাড়ির বগিগুলি। ক্রসিংয়ে এসে বগিগুলি আটকে যায়।’’ জৌগ্রামের বাসিন্দা মইনুর রহমানেরও দাবি, “ওই সময় প্রচুর মানুষ স্টেশন এলাকায় আসেন। আচমকা ওই দৃশ্য দেখে অনেকেই হতভম্ব হয়ে যান।’’