Partha Chatterjee

Arpita-Partha: সরকারকে কর ফাঁকি, পার্থ-অর্পিতার ১০০ কোটির সম্পত্তির হদিস!

পার্থ ও অর্পিতার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া সেই সব দলিলের প্রতিলিপি ভূমি রাজস্ব দফতর থেকে সংগ্রহ করেছে ইডি।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২২ ০৫:২৭
Share:

ফাইল চিত্র।

নগদ তো ‘সামান্য’!

Advertisement

এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর কর্তাদের দাবি, এখনও পর্যন্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া সম্পত্তির দলিল (জমি-বাড়ি-ফ্ল্যাট)-এর বাজার দর একশো কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। ইডি সূত্রের দাবি, এর বাইরেও অন্যান্য সূত্রে পার্থ এবং অর্পিতার আত্মীয়দের নামে সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে। সেই সব সম্পত্তির মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

তদন্তকারীদের দাবি, কলকাতা পুরসভার কসবা ও আনন্দপুরের মাদুরদহ এলাকায় অর্পিতার ‘ইচ্ছা’ সংস্থার নামে দু’টি সম্পত্তি উদ্ধার হয়েছে। কলকাতা পুরসভার খাতায় মাদুরদহের সম্পত্তি খালি জমি হিসেবে নথিভুক্ত। বাস্তবে সেখানে রয়েছে তিনতলা বাড়ি এবং ওই বাড়ি থেকে ভাড়া নেন অর্পিতা। কসবায় কেএমডিএ-র তিনটি প্লটকে একত্র করে বিয়েবাড়ি এবং স্টুডিয়ো ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ, সেটাও কলকাতা পুরসভায় নথিভুক্ত নয়। তদন্তকারীদের প্রশ্ন, পুরসভার খাতায় যেটা খালি জমি, সেখানে বেআইনি বাড়িতে বিদ্যুৎ ও জলের সংযোগ কী করে দেওয়া হল? নিজের প্রভাব খাটিয়ে পার্থ কি সেই অনুমতি বার করেছিলেন?

Advertisement

সরকারি চাকরি বিক্রি, পদোন্নতি ও বদলি করে বেআইনি ভাবে যে টাকা নেওয়া হয়েছিল, সেই টাকায় কেনা সম্পত্তির হদিস যাতে সহজে না পাওয়া যায়, সেই কারণেই ভূমি রাজস্ব দফতর এবং স্থানীয় প্রশাসনের কাছে তথ্য গোপন করে রাখা হয়েছিল বলে ইডি সূত্রের অভিযোগ। তদন্তকারীদের দাবি, এমন বহু জমির দলিল উদ্ধার হয়েছে। অধিকাংশ জমিই বাজার দরের থেকে অনেক কম দামে কেনা হয়েছে। এতে দলিল তৈরির সময়ে রেজিস্ট্রেশন খরচও কমেছে। পরোক্ষে তা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার একটি পথ।

তদন্তকারীদের দাবি, জমি ও ফ্ল্যাট কিনে শুধু দলিল বা চুক্তিপত্র তৈরি করে রেখে দেওয়া হয়েছে। পার্থ ও অর্পিতার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া সেই সব দলিলের প্রতিলিপি ভূমি রাজস্ব দফতর থেকে সংগ্রহ করেছে ইডি। দেখা গিয়েছে, সম্পত্তি কেনার পরে ভূমি রাজস্ব দফতর ও স্থানীয় প্রশাসনের খাতায় মালিকানা হস্তান্তরের রেকর্ড করা হয়নি। এ ভাবে রাজ্য সরকারকে সম্পত্তিকর, খাজনা এবং মিউটেশন (নাম পত্তন) বাবদ কয়েক কোটি টাকা কর ফাঁকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

ভূমি রাজস্ব দফতরের প্রাক্তন এক অধিকর্তা বলেন, ‘‘সাধারণত ফ্ল্যাট অথবা জমি কেনার পরে রেজিস্ট্রেশন ফি দিয়ে দলিল তৈরি করা হয়। সম্পত্তির বাজারদরের উপরে সেই ফি নির্ভর করে। এর পরে ওই দলিলের ভিত্তিতে ভূমি রাজস্ব দফতর এবং স্থানীয় প্রশাসনে (পঞ্চায়েত অথবা পুরসভায়) মালিকানা হস্তান্তরের আবেদন জানাতে হয়। সেই আবেদন মঞ্জুর হওয়ার পর সরকারি খাতায় মালিকের নাম বদল হলে সম্পত্তিকর, খাজনা, পঞ্চায়েত অথবা পুরসভার বার্ষিক কর নির্ধারণ করা হয়।’’

ওই প্রাক্তন ভূমি রাজস্ব অধিকারিকের ব্যাখ্যা, সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে মামলা হলে দলিলের পাশাপাশি সরকারের দেওয়া মিউটেশন সার্টিফিকেট মালিকের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ নথি হয়ে দাঁড়ায়। যদিও তাঁর সহাস্য মন্তব্য, ‘‘মামলার চিন্তা থাকে না ওঁদের (পার্থ)। ওঁদের জমি কে দখল করবে! কিন্তু সম্পত্তি কেনার পরেও তা ভূমি রাজস্ব দফতরে দীর্ঘদিন নথিভুক্ত না করা, রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ারই শামিল। আবার সম্পত্তি কেনার খবর যাতে প্রকাশ্যে না আসে, তার জন্যও তা নথিভুক্ত করা না-ও হতে পারে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement