এনামুল হককে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ। —নিজস্ব চিত্র
সকালে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। শুক্রবার বিকেলে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত গরুপাচার-কাণ্ডের মূল চক্রী এনামুল হককে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল। একই সঙ্গে সিবিআইয়ের হাতে ধৃত বিএসএফ কর্তা সতীশ কুমারকেও ১১ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে ওই আদালত।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, এনামুলকে নিজেদের হেফাজতে ১৪ দিনের জন্য নিতে চেয়ে আদালতে সওয়াল করেন সিবিআইয়ের আইনজীবীরা। পাশাপাশি সতীশ কুমারকে জেল হেফাজতে পাঠানোর আর্জি জানানো হয়। এনামুলের আইনজীবীরা যদিও তাঁদের মক্কেলের জামিনের জন্য জোর সওয়াল করেন। তাঁদের বক্তব্য, এনামুলকে গত নভেম্বরে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করে সিবিআই। সেই সময় তিনি অন্তবর্তীকালীন জামিন পেয়েছিলেন। সেই জামিনের মেয়াদ না-বাড়ানো হলেও তাঁকে আর সিবিআই হেফাজতে পাঠানো যায় না। সিবিআইয়ের তরফে তখন আর্জি জানানো হয়, আদালত দু’জনকেই জামিন দিলে তাঁরা প্রমাণ লোপাট করতে পারেন। প্রভাব খাটাতে পারেন তদন্তের কাজেও। এর পরেই আদালত এনামুল এবং সতীশ কুমারের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
গত ৬ নভেম্বর দিল্লি থেকে এনামুলকে গ্রেফতার করে সিবিআই। ৭ তারিখে তাঁকে হাজির করানো হয় দিল্লির সিবিআই আদালতে। এমানুলের আইনজীবী শেখর কুন্ডু শুক্রবার আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘৭ নভেম্বর দিল্লির আদালত এমানুলকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়ে সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করতে বলে। এমানুল দেখাও করেন। তাঁর কোভিড-১৯ রিপোর্ট সেই সময় পজিটিভ ছিল। সিবিআই ফের বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল থেকে তাঁর কোভিড টেস্ট করায়।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘এক বার কেউ জামিন পেলে, হয় তার মেয়াদ বাড়াতে হয়। লনা হলে তা খারিজ করতে হয়। এ ক্ষেত্রে যে হেতু বাড়ানো হয়নি, তাই ধরে নিতে হবে এমানুল ‘ডিমড কাস্টডি’তে ছিল। ফলে, ১৪ দিনের বেশি তাঁকে সিবিআই হেফাজতে রাখা যাবে না। আমরা আদালতকে সেটাই জানিয়েছিলাম।’’
আরও পড়ুন: ছাত্র সংঘর্ষে তাণ্ডব, ভাঙচুর গোবরডাঙ্গা হিন্দু কলেজে, আহত ১০
আরও পড়ুন: আগুন নিয়ে খেলবেন না, নড্ডার কনভয়ে হামলা নিয়ে মমতাকে হুঁশিয়ারি ধনখড়ের
গরুপাচার চক্রে একের পর এক তল্লাশিতে উঠে আসা তথ্য দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন সিবিআই তদন্তকারীরা। তাঁদের দাবি, গরু পাচারের টাকায় এক দিকে যেমন সতীশ কুমারের মতো বিএসএফ কর্তা বিপুল সম্পত্তি করেছেন, তেমনই এনামুলের মতো পাচারকারীরা অজস্র বেনামি সংস্থা খুলে কয়েকশো কোটি টাকার লেনদেন চালিয়েছেন। তল্লাশির পরে গরু-সোনা-মাদক পাচারের লতায়-পাতায় জড়িয়ে থাকা সম্পর্কের হদিশ মিলেছে বলে তদন্তকারীদের দাবি। সেই সূত্রে একে একে এই চক্রের সকলকেই জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় তারা।