বাঁ দিক থেকে তন্ময়িনী দাস, সুচরিতা বসু, সৈয়দা রুকশেদা, ইন্দ্রাণী লোধ এবং শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী।
করোনায় একের পর এক মৃত্যু হচ্ছে আত্মীয়, পরিজন, পরিচিত ও প্রতিবেশীদের। প্রতি মুহূর্তে মৃত্যু-ভয় চেপে বসছে আমাদের উপর। এই সময়ে আবেগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা আমাদের পক্ষে আরও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। ফলে, এই কঠিন সময়ে কী ভাবে আবেগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় (‘ইমোশনাল ওয়েলনেস’), সেটা নিয়েও ভাবনাচিন্তার প্রয়োজন। আর সেই সুযোগটাই এনে দিল শুক্রবারের একটি ভার্চুয়াল আলোচনাসভা। যার আয়োজক ছিল ‘কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই)’-র ‘ইন্ডিয়া উইমেন নেটওয়ার্ক (আইডব্লিউএন)’-এর পশ্চিমবঙ্গ শাখা।
এই ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতি ও তার পরের সময়ে আমাদের আবেগকে কী ভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, তা খতিয়ে দেখতে শুক্রবার ওই আলোচনাসভায় অংশ নিয়েছিলেন বিশিষ্ট মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকেরা।
আলোচনায় উঠে এল, এই ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতিতে কঠিনতম কাজগুলির অন্যতম মানসিক স্বাস্থ্যকে অটুট রাখা। রাগ, দুঃখ, অভিমান-সহ আমাদের যাবতীয় আবেগকে যতটা সম্ভব নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কী কী করণীয়, তা নিয়ে আলোচনা হল সবিস্তারে।
এক দিকে যে কোনও মুহূর্তে সংক্রমিত হয়ে পড়ার ভয়, মৃত্যুভয়, অন্য দিকে পরিচিতদের একের পর এক মৃত্যুর খবর, কাজ খুইয়ে ফেলার খবর, সামাজিক ভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার যন্ত্রণা আমাদের এখন কুরে কুরে খাচ্ছে। খবরের কাগজ, টেলিভিশন চ্যানেলে শুধুই মৃত্যুমিছিল দেখতে দেখতে আমরা অবসন্ন হয়ে পড়ছি। এই মিছিল কবে শেষ হবে, কোথায় শেষ হবে, তার কোনও কূলকিনারা পাচ্ছি না আমরা।
আরও পড়ুন: রাজ্যে এক দিনে সংক্রমিত ১ হাজার ৮৯৪, বাড়ল সংক্রমণের হার
আরও পড়ুন: তিন দিনে এক লাখ করোনা রোগী! দিশা কোথায়, প্রশ্ন উঠছে ১০ লক্ষ ছুঁয়ে
এই পরিস্থিতিতে আমরা নিজেদের আবেগের উপর আরও বেশি করে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছি। হয়তো না জেনেই। ঘরে থেকেই কাজ করতে হচ্ছে অনেক পুরুষকে। তাই স্ত্রী, ছেলেমেয়ের সঙ্গে তাঁদের আগের চেয়ে অনেক বেশি সময় কাটানোর সুযোগ বেড়ে গিয়েছে। আলোচকরা বললেন, তাঁরা দেখেছেন, এই পরিস্থিতিতে বেড়ে গিয়েছে গার্হ্যস্থ হিংসার ঘটনা, শিশুদের উপর অত্যাচারের ঘটনা। বিশ্ব জুড়েই। আগে এই সব ঘটনায় তাঁরা যে সব রক্ষাকবচ পেতেন, লকডাউনের ফলে তাও ব্যাহত হয়েছে অনেক জায়গায়।
এই পরিস্থিতিতে সেই আইনি সুরক্ষা কী ভাবে সুনিশ্চিত করা যায়, তা নিয়েও আলোচনায় অংশ নিলেন ইন্ডিয়ান সাইকিয়াট্রিক সোসাইটির উইমেন্স মেন্টাল হেল্থের চেয়ারপার্সন শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী, ওই সংগঠনের কো-চেয়ারপার্সন সৈয়দা রুকশেদা ও সংগঠনের আহ্বায়ক তন্ময়িনী দাস। আলোচনায় অংশ নিলেন বিশিষ্ট স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ ইন্দ্রাণী লোধ ও সিআইআই’-এর ‘ইন্ডিয়া উইমেন নেটওয়ার্ক’-এর পশ্চিমবঙ্গ শাখার চেয়ারপার্সন সুচরিতা বসু। এই কঠিন সময়ে প্রসূতি ও সদ্যোজাতের নিরাপত্তার বিষয়টিও উঠে আসে আলোচনায়।