প্রতীকী ছবি।
বকেয়া ৪৪ কোটি ৩০ লক্ষ!
অতিমারির পরিস্থিতিতে এটি টিকার ডোজ় নয়। বরং বিভিন্ন জেলা মিলিয়ে এত টাকার বিদ্যুতের বিল স্বাস্থ্য দফতরের কাছে বকেয়া পড়ে রয়েছে। অবিলম্বে সেই বকেয়া মেটাতে এ বার স্বাস্থ্য দফতরকে চিঠি পাঠাল রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা। জানানো হয়েছে, কোটি টাকার বিল বকেয়া থাকায় রাজ্যের ওই বিদ্যুৎ সংস্থার কাঁধে আর্থিক বোঝা চাপছে।
প্রশাসনের অন্দরের খবর, কী করে জেলাগুলি কোটি টাকার বিল বাকি বকেয়া রেখেছে, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ কর্তারাও। অবিলম্বে বিদ্যুতের বকেয়া বিল মেটানোর জন্য নির্দেশও দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। সোমবার সমস্ত জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের কাছে নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন দফতরের বিশেষ সচিব। গত ৩০ ডিসেম্বর ওয়েস্টবেঙ্গল স্টেট ইলেকট্রিসিটি ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডব্লিউবিএসইডিসিএল) চেয়ারম্যান তথা ম্যানেজিং ডিরেক্টর শান্তনু বসু চিঠি পাঠিয়েছিলেন স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে। সেখানে জানানো হয়েছে, ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ওই সমস্ত বিল বকেয়া রয়েছে। বিল বকেয়ার তালিকায় সব থেকে বেশি টাকা বাকি রয়েছে দার্জিলিং জেলার। সেখানে ১৬ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে। কী করে এত কোটি টাকা বকেয়া থাকে সে বিষয়েও স্বাস্থ্য কর্তারা খোঁজ নিচ্ছেন বলেই সূত্রের খবর।
‘ডব্লিউবিএসইডিসিএল’-র তালিকা থেকে জানা যাচ্ছে, দার্জিলিংয়ের পরেই রয়েছে নদিয়া জেলা (৫.০১ কোটি)। তারপরে যথাক্রমে হুগলি (৪.৭০ কোটি), বীরভূম (২.২২ কোটি), মুর্শিদাবাদ (২.১৬ কোটি), মালদহ (২.০৪ কোটি), পূর্ব বর্ধমান (১.৯০ কোটি), পুরুলিয়া (১.৮১ কোটি), পূর্ব মেদিনীপুর (১.৬৮ কোটি) ও পশ্চিম বর্ধমান (১.৩৭ কোটি)। পাশাপাশি দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বিধাননগর, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, জলপাইগুড়ি, রায়গঞ্জ, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও দক্ষিণ দিনাজপুরে কয়েক লক্ষ টাকা করে বিল বকেয়া রয়েছে। জানা গিয়েছে, ৪৪ কোটি ৩০ লক্ষ টাকার মধ্যে আসল বিলের অঙ্ক ৩২ কোটি ৯৯ লক্ষ। তার উপর যুক্ত হয়েছে ১১ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা ‘লেট পেমেন্ট সারচার্জ’।
চিঠিতে আরও জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্য দফতরের এত কোটি টাকা বকেয়া থাকার কারণে রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার উপরে আর্থিক বোঝা চেপে যাচ্ছে। তার ফলে অন্যদের টাকা দিতেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ওই সংস্থাকে। তাতে আগামী দিনে জরুরি পরিষেবাতে বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এই চিঠি পাওয়ার পরেই খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করেন স্বাস্থ্য কর্তারা। যদিও বিষয়টি নিয়ে বিশদে কেউ কিছু বলতে চাননি তাঁরা। এক শীর্ষ কর্তা শুধু বলেন, “বকেয়া বিল দ্রুত মেটানোর জন্য সমস্ত জেলাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অবিলম্বে বিল মিটিয়ে দেওয়া হবে।”