প্রতীকী ছবি।
হাও়ড়ার পুরনির্বাচন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয়ে গেল। হাওড়ায় বর্তমান পুরবোর্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে ১০ ডিসেম্বর। সাধারণত একসঙ্গে ছ’মাসের জন্য প্রশাসক বসানোর সংস্থান আছে। সেই বিধি সংশোধন করে এ বার তা অনির্দিষ্টকালের জন্য করে দেওয়া হল। ফলে হাওড়া পুরসভাও অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রশাসকের অধীনে থাকবে।
রাজ্যের আরও ৫টি পুরবোর্ডের মেয়াদ ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। সেখানেও তড়িঘড়ি ভোট করে পরবর্তী বোর্ড গঠনের পথে হাঁটতে নারাজ রাজ্য সরকার। সেখানেও প্রশাসক দিয়েই কাজ চালাতে মঙ্গলবার আইন সংশোধন করেছে সরকার। প্রথমে প্রশাসক ছ’মাসের জন্য বসানো হলেও, পরবর্তীকালে তার মেয়াদ আরও কতটা বাড়বে তা রাজ্য সরকার ঠিক করবে বলে সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রসঙ্গত, অক্টোবর, নভেম্বরে মেয়াদ ফুরনো ১২টি পুরসভায় ইতিমধ্যেই প্রশাসক কাজ শুরু করে দিয়েছে।
বিধানসভায় এ দিন ‘দ্য হাওড়া মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৮’ এবং ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৮’ পাশ হয়েছে। হাওড়া পুরসভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য এবং অন্যান্য পুরসভাগুলিতে প্রশাসক নিয়োগের কারণ ব্যাখ্যা করে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বিধানসভায় বলেন, ‘‘যখন যেখানে মেয়াদ শেষ হচ্ছে, সেখানে তখনই ভোট না করে অনেকগুলি পুরসভায় একসঙ্গে ভোট করা হবে। যথাসময়ে ভোট করা হবে। তার আগে প্রশাসক দিয়েই কাজ চালানো হবে।’’ পরে কংগ্রেসের সচেতক মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এত ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কেন সরকার ভোটে না গিয়ে প্রশাসক বসাচ্ছে? আসলে মানুষকেই এখন ভয় পাচ্ছে ওরা। তাই গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে মারতে চাইছে।’’
দিন কয়েক আগে কলকাতা পুরসভার সংশোধনী বিলের আলোচনায় বিরোধীরা ছিলেন না। এ দিনের দু’টি বিলেই তাঁদের অংশ নেওয়ার কথা ছিল। তবে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পরেও তা পরে খারিজ হওয়ায় বিতর্ক তৈরি হয়। বিলের আলোচনার সময়ে বিরোধীরা সভায় থাকলেও তাতে অংশ নেননি। পুরমন্ত্রী প্রশাসক বসানোর যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী ও শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। সভার পরে অশোকবাবু বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার ২৪৩ (কিউ) অনুচ্ছেদে পুরসভাকে স্থানীয় প্রশাসনের কেন্দ্র হিসেবেই দেখানো আছে। রাজ্য সরকার এই ধরনের বিল পাশ করে একদিকে সংবিধানের কাঠামোকে অগ্রাহ্য করছে। অন্যদিকে, গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট করছে।’’ অশোকবাবুর অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল সরকার পরপর পদক্ষেপ করে পুরসভা ও পঞ্চায়েতের ক্ষমতা কমিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের হাতে তুলে দিচ্ছে।’’