পুরনির্বাচন নিয়ে রাজ্যকে চিঠি পাঠাচ্ছে কমিশন। — ফাইল চিত্র।
পুরভোট নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে টালবাহানার অভিযোগে সরব বিরোধীরা। কবে থেকে, কত দফায় ভোট হবে—তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট ভাবে কিছু জানা যায়নি। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসকে ডেকে পাঠিয়ে অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ ভোট করানোর পরামর্শ দিয়েছেন। এ বার পুরনির্বাচন নিয়ে রাজ্যকে চিঠি পাঠাচ্ছে কমিশন। রাজ্য নির্বাচন কমিশনারও চিঠি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
আগামী এপ্রিলের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে রাজ্যে পুরসভা নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জল্পনা চলছে অনেকদিন ধরেই। প্রথম দফায় কলকাতা ও হাওড়া পুর নিগমের ভোট। এপ্রিলের শেষে দ্বিতীয় দফায় আরও কয়েকটি পুরসভায় ভোটের সম্ভাবনা। কয়েকটি পুরসভার ভোট মে এবং জুন মাসে হওয়ার সম্ভাবনার কোথাও শোনা যাচ্ছে।পুরভোটের বিষয়ে রাজ্য সরকারের তরফে নির্বাচন কমিশনকে কিছু না জানানোয়এবার কমিশনই তা জানতে চাইছে বলে সূত্রের খবর। কমিশনও চাইছে এবার নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হোক। ব্যালট নাকি ইভিএম, ১১১টি পুরসভার মধ্যে কোথায়, কত দফায়, কবে ভোট চায় রাজ্য— তা জানতেই চিঠি দেওয়া হচ্ছে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর। কমিশনার সৌরভ দাস বলেন, ‘‘রাজ্যকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে।’’
রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, আগামী ১০-১২ এপ্রিল কলকাতা এবং হাওড়া পুরসভায় নির্বাচনের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এপ্রিলের ২৫-২৬ তারিখ নাগাদ বাকি পুরসভাগুলিতে ভোট হতে পারে। দু’দফাতেই ভোট শেষ করতে চাইছে কমিশন। যদিও রাজ্য তিন দফায় ভোট শেষ করতে চাইছে বলে সূত্রের খবর। সে ক্ষেত্রে শেষ দফার ভোট হতে পারে মে মাসে।ইতিমধ্যেই ৯৩টি পুরসভার আসন সংরক্ষণ সংক্রান্ত চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। আরও ১৭টি পুরসভাতেও নির্বাচন হওয়ার কথা।
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, তারা পুরনির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। ইভিএমে ভোট করাতে কমিশন তৈরি রয়েছে বলে সূত্রের খবর। ইভিএমের সঙ্গে সে ক্ষেত্রে ভিভিপ্যাটও ব্যবহার করা হতে পারে। যদি তাই হয়, তবে এ বারই প্রথম পুর নির্বাচনে ভিভিপ্যাট-সহ ভোট হবে। শোনা যাচ্ছে, রাজ্যও ইভিএমের বিপক্ষে নয়। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যালটে ভোট করার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত কী হবে, তা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
আরও পড়ুন-কেন্দ্রের কাছে প্রাপ্য ও সহযোগিতা দাবি মমতার
পুরভোটের নিয়ম অনুযায়ী, খসড়া তালিকা বেরোনোর ১০ সপ্তাহ পর ভোট করাতে কোন অসুবিধা থাকে না। সেই হিসাব ধরলে ২৭ মার্চের পর যে কোন দিনই ভোট হতে পারে। ৩১ মার্চের মধ্যে সব বোর্ডের পরীক্ষা শেষ হয়ে যাচ্ছে। এর পর ভোটের দিনক্ষণ ঠিক করতে চায় কমিশন। যাতে দ্রুত এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায় সে জন্যই ওই চিঠি বলে কমিশনের একটি সূত্র দাবি।
শেষ বার ব্যালটে ভোট হয়েছিল গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে। বছর দুয়েক আগে অর্থাৎ ২০১৮-র সেই নির্বাচন ঘিরে বিরোধীদের অভিযোগের অন্ত ছিল না। ব্যালট লুঠের পাশাপাশি গণনাকেন্দ্রে ঢুকে ছাপ্পা মারার অভিযোগও উঠেছিল শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আসন্ন পুরভোটে পুরনো পঞ্চায়েত বিতর্ককে মাথায় রেখে রাজ্য নির্বাচন কমিশন চাইছে, ইভিএমেই ভোট প্রক্রিয়া সারতে।