—ফাইল চত্র
আত্মসমর্পণ নয়। গ্রেফতার। গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিই অবলম্বন করার জন্য থানাগুলিকে নির্দেশ দিয়েছেন কমিশনারেট এবং জেলা পুলিশ কর্তারা।
এখনও পর্যন্ত রাজ্যের আট-ন’টি জেলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করা নিয়ে সন্তুষ্ট নয় জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এ নিয়ে কোনও রকম গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না বলে শুক্রবার এক ভিডিয়ো সম্মেলনে পুলিশ কর্তাদের স্পষ্ট জানিয়েছেন বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন। প্রয়োজনে ওই সব কর্তার বিরুদ্ধে যে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে তা-ও বুঝিয়েছে কমিশন।
এই পরিস্থিতিতে গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকরের ক্ষেত্রে কোনও রকম গয়ংগচ্ছ মনোভাব বরদাস্ত করা হবে না বলে থানাগুলিকে সতর্ক করেছেন পুলিশ কর্তারা। প্রতিটি থানাকে গ্রেফতারি পরোয়ানার সংখ্যা যাচাই করে তা অতি দ্রুত কার্যকর করতে বলা হয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গের এক পুলিশ কর্তার ব্যাখ্যা, আদালত থেকে জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করার ক্ষেত্রে অতীতে অনেক গাফিলতি ধরা পড়েছে। অভিযুক্ত রাজ্যের বাইরে রয়েছেন অথবা পরিকাঠামোর অভাবে তাঁকে ধরা যায়নি বলে আদালতের কাছে রিপোর্ট পাঠিয়ে দিয়ে দায় সেরেছিল সংশ্লিষ্ট থানা। অথচ বাস্তবে দেখা গিয়েছিল, অভিযুক্ত এলাকাতেই ঘোরাফেরা করছেন। রাজনৈতিক দলের সভা-সমিতিতেও দেখা যাচ্ছে তাঁকে। অন্য রাজনৈতিক দল সেই ছবি তুলে কমিশনের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে। আর তাতে বেকায়দায় পড়তে হয়েছে কমিশনারেট বা জেলার পুলিশ কর্তাদের। সে কারণে এ বার বলা হয়েছে, অভিযুক্তের আত্মসমর্পণের দিকে তাকিয়ে বসে থাকলে চলবে না, তাঁকে যে ভাবেই হোক গ্রেফতার করতে হবে। পাশাপাশি, আদালতে কেউ আত্মসমর্পণ করলে তার রিপোর্টও ঠিকমতো তৈরি করতে হবে থানাকে।
রাজ্য পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করা নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে কমিশন। বিশেষ করে আদালতের তরফে জামিন-অযোগ্য ধারায় জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করা না-হলে সংশ্লিষ্ট কর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সর্তক করা হয়েছে।’’
কমিশন সূত্রে খবর, রাজ্যে ২০১৪ সালের লোকসভা ও ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে গ্রেফতারি পরোয়ানার সংখ্যা ছিল গড়ে ৬৫-৭০ হাজার। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী এখন আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সে ক্ষেত্রে গ্রেফতারি পরোয়ানার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া উচিত। যদিও একটি সূত্রের দাবি, পরিস্থিতি তেমন নয়। অন্য বারের থেকে এ বার গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করার হার ভাল। যদিও কমিশনের হিসেব সে কথা বলছে না।