শেখ শাহজাহান। — ফাইল চিত্র।
বেআইনি ভাবে জমি দখল ও মেছো ভেড়ির লেনদেনকে সামনে রেখে শেখ শাহজাহানকে ‘প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট’ (পিএমএলএ)-এর ঘেরাটোপে ফেলতে চায় ইডি। তাই, আজ, সোমবার বিচারভবনে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির ‘বেতাজ’ বাদশা-কে হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে বলে ইডি সূত্রের খবর।
ইতিমধ্যেই সিবিআই মামলায় বসিরহাট সংশোধনাগারে থাকা শাহজাহানকে গ্রেফতার দেখিয়েছে (শোন অ্যারেস্ট) ইডি। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর, সোমবার শাহজাহানকে তাঁদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন মঞ্জুর হলে, প্রয়োজনে ওই দিনই তাঁকে আদালতে পেশ করে হেফাজতে নেওয়াও হতে পারে।
রবিবার ইডির এক আইনজীবী বলেন, ‘‘পিএমএলএ-তে শোন অ্যারেস্ট শাহজাহানকে সোমবার সরাসরি বসিরহাট সংশোধনাগার থেকে সিবিআই বিশেষ আদালতে পেশ করা হতে পারে।’’ শাহজাহানের আইনজীবী জাকির হোসেন রবিবার বলেন, ‘‘ইডি আদালতে নথি পেশ করার পরে বিচারকের কাছে শুনানির আবেদন করা হবে।’’
প্রসঙ্গত, শাহজাহানের বিরুদ্ধে ইডির তরফে দু’টি ইসিআইআর (এনফোর্সমেন্ট কেস ইনভেস্টিগেশন রিপোর্ট) রয়েছে। একটি রেশন বণ্টন দুর্নীতি এবং আর একটি বেআইনি ভাবে জমি দখল ও মাছ চাষ। এমনকি মাছ আমদানি-রফতানির মাধ্যমে বিদেশে কোটি কোটি টাকা বেআইনি লেনদেনের মামলাও রয়েছে।
গত শুক্রবার সিবিআইয়ের হেফাজত থেকে শাহজাহানকে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছিল। শনিবার সকালে বসিরহাট আদালতে বেআইনি ভাবে জমি দখল ও মাছ আমদানি রফতানি ব্যবসার মামলায় শাহজাহানকে সংশোধনাগারে গিয়ে জেরা করার আবেদন করেন ইডির আইনজীবীরা। বিচারক ওই আবেদন মঞ্জুর করেন। এর পরেই সে দিন দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত শাহজাহানকে সংশোধনাগারে গিয়ে জেরা করেন ইডির তদন্তকারীরা।
ইডি সূত্রের দাবি, ওই জেরার সময়ে জেলে বসে একাধিক প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়েছেন শাহজাহান। ইডি কর্তাদের অভিযোগ অনুযায়ী, তদন্তে সম্পূর্ণ অসহযোগিতা করতে থাকেন তিনি। তখনই ঠিক হয়, নিজেদের হেফাজতে নিয়ে শাহজাহানকে জেরার প্রয়োজন রয়েছে। তাই, তাঁকে গ্রেফতার দেখানো (শোন অ্যারেস্ট) হয়।
ইডি সূত্রের দাবি, প্রথমে বেআইনি জমি দখল ও পরবর্তীকালে রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায় হেফাজতে নেওয়া হবে শাহজাহানকে। তদন্তকারীদের দাবি, বেআইনি ভাবে জমি দখল ও রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায় কোটি কোটি কালো টাকা বিদেশে পাচার ও বেআইনি ভাবে সম্পত্তি কেনা ও ব্যবসায় বিনিয়োগ করা হয়েছিল। দু’টি ক্ষেত্রেই শেখ শাহজাহানের জড়িত থাকার যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে বলেই দাবি করেছেন তদন্তকারীরা।