নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে কালীঘাটের কাকু তথা সুজয়ের নাম প্রথম প্রকাশ্যে আনেন নিয়োগ মামলায় অভিযুক্ত তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুবনেতা কুন্তল ঘোষ। ফাইল চিত্র
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরের প্রাক্তন কর্মী সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র তথা ‘কালীঘাটের কাকু’র যোগ রয়েছে এমন তিনটি সংস্থায় তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সন্দেহ ছিল, ওই সংস্থাগুলির আড়ালে কালো টাকা সাদা করার কাজ চলত। গত শনিবার দুপুরে ওই তল্লাশি চালানো হয়। তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সোমবার সকালে একটি সংস্থার আধিকারিককে ডেকে পাঠাল ইডি। ইডি সূত্রে খবর, ওই আধিকারিকের নাম অমিতকুমার কর্মকার। তাঁকে ওই সংস্থা সংক্রান্ত নির্দিষ্ট কিছু নথিপত্র সঙ্গে নিয়ে দেখা করতে বলা হয়েছে ইডির দফতরে।
শনিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেককে তলব করেছিল সিবিআই। আবার শনিবার সুজয়ের বাড়ি, ফ্ল্যাট, অফিস-সহ তাঁর সঙ্গে যোগ রয়েছে এমন কয়েকটি সংস্থার অফিসে তল্লাশি চালায় ইডি। এর আগে সুজয়ের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআইও। সে সময় সুজয়ের বাড়ি থেকে কয়েক লক্ষ টাকা এবং একটি অ্যাডমিট কার্ড পাওয়া যায়। একটি ফোনও বাজেয়াপ্ত করা হয় তাঁর কাছ থেকে। ইডি অবশ্য শনিবার সুজয়ের ওই সমস্ত ঠিকানায় তল্লাশি চালিয়ে কী পাওয়া গিয়েছে তার বিশদ জানায়নি। অবশেষে সোমবার সুজয়ের যোগ রয়েছে এমন একটি সংস্থার আধিকারিককে তলব করা হল। ইডি সূত্রে খবর, ওই সংস্থার লেনদেন এবং টাকার উৎসে নজর রয়েছে তদন্তকারীদের। সে ব্যাপারেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে অমিতকে।
নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে কালীঘাটের কাকু তথা সুজয়ের নাম প্রকাশ্যে আনেন নিয়োগ মামলায় অভিযুক্ত ব্যবসায়ী তাপস মণ্ডল। তাপস জানিয়েছিলেন, অযোগ্যদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সময় নাকি তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুবনেতা কুন্তল ঘোষ আশ্বাস দিয়ে বলতেন, ‘‘কালীঘাটের কাকুর সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছে। চিন্তার কোনও কারণ নেই।’’ ইডি সূত্রে খবর, পরে তাপস এবং নিয়োগ মামলার আরও এক অভিযুক্ত গোপাল দলপতিকে জেরা করে জানা যায়, কালীঘাটের ‘কাকু’ আসলে রাজ্যের এক প্রভাবশালী শীর্ষ নেতার সংস্থার সিইও। তার পর থেকেই ইডি-সিবিআইয়ের নজরে রয়েছেন সুজয়।
যদিও পরে কুন্তল নিজেই জানিয়েছিলেন, তিনি যে ‘কালীঘাটের কাকু’র কথা বলছেন, তিনি সুজয় নন। এই সুজয়কে তিনি চেনেন না। অন্য দিকে, সুজয় দাবি করেছিলেন, ‘‘তৃণমূলের সাংসদ অভিষেক আমার ‘সাহেব’। সাহেবকে কেউ ছুঁতে পারবে না। কেউ সেই চেষ্টা করলে, আমার (অর্থাৎ সুজয়ের) কাছেই এসে থেমে যেতে হবে।’’