পার্থের ঘনিষ্ঠ এজেন্টের নাম জানিয়েছেন শান্তনু এবং অয়ন দু’জনেই। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
প্রাথমিকে নিয়োগ মামলায় ইডির চার্জশিটে এ বার উঠে এল পার্থ চট্টোপাধ্যায় ‘ঘনিষ্ঠ’ আরও এক এজেন্টের নাম। ইডি জানিয়েছে, সন্তু গঙ্গোপাধ্যায় নামে ওই এজেন্টের বাড়ি বেহালায়। পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ এই সন্তুর কাছে বিভিন্ন সময়ে জমা পড়েছে নিয়োগ দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা। এমনটাই দাবি ইডির চার্জশিটে।
বেহালার ওই এজেন্ট, সন্তুর কথা ইডিকে জানিয়েছেন নিয়োগ মামলায় অভিযুক্ত তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার হুগলির প্রোমোটার অয়ন শীলকে জেরা করেও সন্তুর নাম জানতে পেরেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
সন্তু আসলে কে? ইডিকে দেওয়া বয়ানে শান্তনু জানিয়েছেন, ২০১২ এবং ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার্থীদের থেকে চাকরি দেওয়ার নামে প্রচুর পরিমাণে অর্থ তুলেছিলেন অয়ন। সেই টাকা তিনি হুগলির বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ এবং সন্তুকে দিয়েছিলেন, তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থের সাহায্যে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য। শুধু তা-ই নয়, ইডিকে শান্তনু জানিয়েছেন, বেহালার সন্তু এবং হুগলির কুন্তল— দু’জনেই ছিলেন পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’। অয়ন এবং পার্থের মধ্যে তাঁরা সেতু হিসাবে কাজ করতেন। পৌঁছে দিতেন চাকরিপ্রার্থীদের অর্থ।
সোমবার নগর দায়রা আদালতে শান্তনু, অয়ন-সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে ইডি। সেই চার্জশিটে শান্তনুর বয়ানের পাশাপাশি অয়নের বক্তব্যও আদালতকে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। জেরায় ইডির কাছে অয়ন স্বীকার করেছে, পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ সন্তুর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তাঁর। অয়ন জানিয়েছেন, ২০১২ এবং ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার্থীদের থেকে নিয়োগের মূল্য বাবদ ৪৫ কোটি টাকা তাঁকে দিয়েছিলেন বিভিন্ন জেলার এজেন্টরা। এর মধ্যে ২৬ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা অয়ন দিয়েছিলেন বেহালার সন্তুকে। কুন্তলই তাঁকে বলেছিলেন ওই টাকা সন্তুকে দিতে। অয়ন জানিয়েছেন, এ ছাড়াও ৬০ লক্ষ টাকা তিনি দিয়েছিলেন কুন্তলকে। তা হলে কি এই টাকা সন্তু মারফত পার্থের কাছেই পৌঁছেছিল? চার্জশিটে অবশ্য সেই প্রশ্নের কোনও জবাব দেয়নি ইডি। শুধু লেখা আছে, অর্থ পার্থের ‘ঘনিষ্ঠের’ কাছে পৌঁছেছিল।