চলছে ইডি তল্লাশি। বাইরে পাহারায় কেন্দ্রীয় বাহিনী। —নিজস্ব চিত্র।
শাহজাহান শেখের বিরুদ্ধে আমদানি-রফতানি সংক্রান্ত একটি মামলায় তদন্তের সূত্রে সন্দেশখালির একাধিক জায়গায় হানা দিলেন ইডি আধিকারিকেরা। বৃহস্পতিবার সকালে সেখানকার অন্তত তিনটি জায়গায় পৌঁছে যান তদন্তকারীরা। ধামাখালির কাছে একটি মাছের পাইকারি বাজার ঘিরে রেখে তল্লাশি চলছে। এই বাজারের অন্যতম অংশীদার নজরুল মোল্লার বাড়িও পৌঁছে গিয়েছেন ইডি আধিকারিকেরা। বাড়ির সামনে মোতায়েন করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের। প্রসঙ্গত, রেশন বণ্টন মামলাতেও শাহজাহানের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে ইডি।
বৃহস্পতিবার ইডির তল্লাশি অভিযান শুরুর আগেই সন্দেশখালিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বড় একটি দল মূল রাস্তা ঘিরে ফেলে। নদীর পারও ঘিরে ফেলেন বিএসএফ জওয়ানেরা। ইডি সূত্রে জানা যাচ্ছে, সন্দেশখালির মোট তিনটি জায়গায় একই সঙ্গে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। যে বাজার ঘিরে রেখে তল্লাশি চলছে, সেখানে কাঁকড়া, চিংড়ি মাছের পাইকারি ব্যবসা চলত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। মাছব্যবসায়ী ছাড়াও ইমারতি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত এক ব্যবসায়ীর বাড়িতেও তল্লাশি চলছে।
কিন্তু কোন মামলার সূত্রে এই তল্লাশি অভিযান? ইডি সূত্রে খবর, সম্প্রতি আমদানি-রফতানি সংক্রান্ত ব্যবসায় ‘অনিয়ম’ নিয়ে তারা নতুন একটি ইসিআইআর বা অভিযোগ দায়ের করে। তার ভিত্তিতেই শুরু হয় তদন্ত। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি এই মামলার তদন্তে হাওড়া, কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা-সহ মোট ছ’জায়গায় হানা দেন ইডি আধিকারিকেরা। তল্লাশি চালানো হয় ‘শাহজাহান-ঘনিষ্ঠ’ বেশ কয়েক জন মাছ ব্যবসায়ীর বাড়িতেও। ইডি সূত্রেই জানা যায়, এই ব্যবসায়ীদের কয়েক জন শাহজাহানের সঙ্গে চিংড়ি মাছের ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন। অভিযোগ, মাছের ব্যবসায় দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করা হয়েছে।
নদীর পারে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরাও। বৃহস্পতিবার সন্দেশখালিতে। —নিজস্ব চিত্র।
এর আগে রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় সন্দেশখালির সরবেড়িয়ায় শাহজাহানের বাড়িতে হানা দিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকেরা। কিন্তু গত ৫ জানুয়ারি সেখানে গিয়ে ‘আক্রান্ত’ হতে হয় ইডি আধিকারিকদের। শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ ওঠে। তার পর ৫৫ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন ‘সন্দেশখালির বাঘ’ বলে পরিচিত শাহজাহান। ৫৬ দিনের মাথায় গত ২৯ ফেব্রুয়ারি তাঁকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ। বসিরহাট আদালত তাঁকে ১০ দিনের হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল। সিআইডি-র হেফাজতে ছিলেন তিনি। পরে কলকাতা হাই কোর্ট শাহজাহানকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে বলে। সন্দেশখালিকাণ্ডের তদন্তের ভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। রবিবার শাহজাহানকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাঁকে ১৪ মার্চ পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।