নদিয়ায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপে রেশন ডিলারের বাড়ি। চলছে ইডি তল্লাশি। —নিজস্ব চিত্র।
রেশন ‘দুর্নীতি’ কাণ্ডে শনিবার সকাল থেকেই জেলায় জেলায় ইডির তল্লাশি অভিযান চলছে। আবার নদিয়ার একাধিক জায়গায় অভিযান চালাচ্ছেন ইডির আধিকারিকেরা। শনিবার উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ থেকে নদিয়ার রানাঘাট— জায়গায় জায়গায় চলছে অভিযান এবং জিজ্ঞাসাবাদ।
শনিবার সকালে ইডির চার সদস্যের একটি দল পৌঁছে যান রানাঘাটে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে নিয়ে রানাঘাটের এক রেশন ডিলারের বাড়িতে যান তদন্তকারীরা। বাইরে থেকে বাড়ি ঘিরে রাখেন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানেরা। রানাঘাট স্ট্যান্ড রোডের পাশে রেশন ডিলারের প্রাসাদোপম বাড়িতে তল্লাশি শুরুর কিছু ক্ষণ বাদে রানাঘাট পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক পাড়ায় এক রেশন ডিলারের বাড়িতেও ইডি হানার খবর মিলেছে।
তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, রানাঘাট স্ট্যান্ড রোডে খাদ্য দফতর অনুমোদিত ন্যায্য মূল্যে রেশন দোকান চালান নিতাই ঘোষ নামে এক ব্যক্তি। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন ধরেই অভিযোগ আসছিল যে তিনি রেশনে বরাদ্দ চাল এবং আটা খোলা বাজারে বিক্রি করে দেন। অভিযুক্ত নিতাইয়ের সঙ্গে রেশনের খাদ্যদ্রব্য সরবরাহের বরাত পাওয়া বাকিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠতা ছিল বলে দাবি করেছেন স্থানীয়দের একাংশ। এমনকি, নদিয়ায় বাকিবুরের চাল এবং আটাকলে যাতায়াতও ছিল নিতাইয়ের। এমনটা ইডি সূত্রে খবর। জানা যাচ্ছে, বাকিবুরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যে একাধিক ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে, তাঁদের অন্যতম নিতাই। তদন্তকারী সূত্রে দাবি, ভুয়ো রেশন কার্ড ব্যবহার করে কয়েকশো চালকল এবং আটাকলের মাধ্যমে বছরের পর বছর কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ন্যায্য মূল্যের রেশন সামগ্রী খোলা বাজারে বিক্রি করেছেন নিতাই। রানাঘাট পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক পাড়ায় আর এক রেশন ডিলার সিদ্ধেশ্বর বিশ্বাসের বাড়িতেও গিয়েছে ইডি। রেশন দুর্নীতিতে ধৃত বাকিবুর রহমানের সঙ্গে নিতাই বা সিদ্ধেশ্বরের কী যোগ রয়েছে, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এর মধ্যে হাওড়ার ডোমজুড়ে জালান কমপ্লেক্সের অঙ্কিত ইন্ডিয়া লিমিটেড নামে একটি আটা তৈরির কারখানা এবং গোডাউনে ইডি হানার খবর মিলেছে। গভীর রাত থেকে এখনও সেখানে তল্লাশি চলছে। ঘটনাস্থলে রয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে, এখান থেকেই রেশন দোকানে আটা, ময়দা এবং অঙ্গনওয়াড়ি স্কুলের শিশুদের খাবার সরবরাহ করা হত।
রেশন ‘দুর্নীতি’-র তদন্তে নদিয়ার একাধিক জায়গায় আগেও হানা দিয়েছে ইডি। নদিয়ার শান্তিপুরের বাইপাস সংলগ্ন বাবলা কন্দখোলায় সপ্তাহ দুয়েক আগেই অভিযান চলে। কয়েক দিন আগে কৃষ্ণনগর-১ এবং ২ ব্লকের একাধিক মুদির দোকান এবং খোলা বাজারে রেশন সামগ্রী বিক্রয়কারী একাধিক ব্যবসায়ীর বাড়িতে তল্লাশি হয়েছে।